হাড় ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মেধাবী শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন সুমন। এ রোগ থেকে সেরে উঠতে চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু তার বাবা একজন কৃষি শ্রমিক, বাবার পক্ষে কোনোভাবেই এতো টাকার যোগার করা সম্ভব নয়। কেবলমাত্র টাকার অভাবে ক্যান্সারের সাথে অসম যুদ্ধে হারতে বসেছে এ মেধাবী শিক্ষার্থীর স্বপ্ন।
সুমন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চরপিপলা গ্রামের আজহার হোসেনের একমাত্র ছেলে ও ফোকলোর অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ষ্টাডিজ বিভাগের মাষ্টার্সের শিক্ষার্থী।
সুমন জানান, ২০২২ সালের জুলাই তার স্পাইনাল কর্ডে টিউমার ধরা পরে। টিউমারটি শিরায় চাপ দিতে থাকলে শরীরে অসহনীয় ব্যাথা ও ধীরে ধীরে দুই পায়ে অসাড়ভাব নেমে আসতে থাকে। এমতাবস্থায় ঢাকার মোহাম্মদপুরের আল-মানার হাসপাতালে টিউমার অপসারণ করা হয়।
তিনি বলেন, এর ৩ মাস পর আবার ব্যথা শুরু হলে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় হাড় ক্যান্সার ধরা পড়ে। সেখানে তিনি অধ্যাপক ডাক্তার এস কে সাদের হোসেনের তত্ববধানে চিকিৎসাধীন থেকে ১২টি কেমোথেরাপি ৩৮টি রেডিওথেরাপি নিয়ে কিছুটা সুস্থ্য হয়ে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাড়ি ফিরেন।
সুমন আরো জানান, চলতি বছরের শুরুতে নতুন পরীক্ষা রিপোর্টে দেখা যায়- আক্রান্ত ক্যান্সার সেল ফিরে এসেছে এবং সেটি ফুসফুস ও স্পাইনাল কর্ডে ছড়িয়ে পড়েছে। ডাক্তার সাদের হোসেন উন্নত চিকিৎসার জন্য সুমনকে ভারতের ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে (সিএমসি) চিকিৎসার পরামর্শ দেন। এরইমধ্যে সুমনের চিকিৎসা করাতে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছে তার পরিবার। ধারদেনা করে বর্তমানে সুমনকে ভারতের ভেলোরের সিএমসি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে পাঠিয়েছে তার পরিবার। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। মেধাবী শিক্ষার্থী সুমন বাঁচাতে সবার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।
সুমনের প্রতিবেশী ও স্কুল শিক্ষক শফিকুল ইসলাম জানান, দেশে চিকিৎসা করাতে গিয়েই সুমনের পরিবার সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। সম্পদ বলতে তার পরিবারে বসত-ভিটার ৫ শতাংশ জমি রয়েছে। দেনায় দায়ে সেটিই বিক্রির পথে। পরিবার সাধ্যমতো চিকিৎসা চালানোর খরচ নির্বাহ করত ব্যর্থ হয়ে সহৃদয় ব্যক্তি,মানবিক ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তায় চলছে সুমনের চিকিৎসা।
সুমনের পিতা আজহার হোসেন বলেন, দুই মেয়ে আর এক ছেলের মধ্যে সুমন সবার ছোট। স্বপ্ন নিয়ে ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেছিলাম। স্বপ্ন পুরণ দুরের কথা ক্যান্সারের কাছে ছেলেকেই হারাতে বসেছি। ছেলের চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। ছেলেকে বাঁচাতে তিনি সুহৃদ, দানবীর ও মানবিক মানুষের সহায়তা চেয়েছেন। সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা-দেলোয়ার হোসেন, অগ্রনী ব্যাংক চাঁচকৈড় বাজার শাখা এ্যকাউন্ট নম্বর-০২০০০২২০৮১১৫৮। বিকাশ ০১৭৬৪৯০৩০১১।
রাবির ফোকলোর অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ষ্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ছাত্র উপদেষ্ঠা আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, সুমন আমার এলাকার ছেলে। প্রাথমিকভাবে বিভাগের পক্ষ থেকে কিছু আর্থিক সহযোগীতা করা হয়েছে। বড় আর্থিক সহযোগীতা করতে ছাত্র-শিক্ষক সমন্ময়ে ফান্ড গঠনের চেষ্টা চলছে। চিকিৎসার প্রয়োজনীয় তথ্যাদী দিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে সহযোগীতার আবেদন করলে সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার নজরে এনে চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আশ্বাও দেন তিনি।
বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে