পঞ্চগড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৪১ জন শিক্ষকের বকেয়া বিল দিতে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছে। উপজেলা ও জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে দেওয়ার কথা বলে এ অর্থ নেন বড়বাড়ি গোয়ালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আব্দুল কাইয়ুম, ২নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. চঞ্চল মাহমুদ ও মালিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান। বিষয়টি জানাজানি হলে বিদ্যালয়ের প্রধান ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ঘটনাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানা যায়, সদর উপজেলার ৭৩ জন জ্যেষ্ঠ ও কনিষ্ঠ শিক্ষকের মধ্যে বেতন সমতাকরন বকেয়া বিল, ডিপিএড প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত স্কেলে বেতন পূর্ননির্ধারন সংক্রান্ত ২৭ জনের বিল এবং প্রধান শিক্ষকের চাকুরি স্থায়ীকরনের জন্য ৪১ জনের অর্থ উত্তোলন করে অভিযুক্ত এ তিন শিক্ষক। এ ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা অফিস ঘিরে রয়েছে আইয়ুব আলীসহ আরো কয়েকজন শিক্ষকের সিন্ডিকেট।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে একজন সহকারি শিক্ষিকা মোছা. সুইটি বেগম বলেন, ডিপিএড এর বকেয়া বিলের জন্য চঞ্চল স্যারকে কয়েক দফায় সাড়ে ৪ হাজার টাকা দীর্ঘদিন আগে দিয়েছি। এখনো বিলের কোন ব্যবস্থা হয়নি। সহকারি শিক্ষক সনম ফারহানা দিয়েছেন ২ হাজার ৫০০ টাকা। সহকারি শিক্ষিকা মোছা. হালিমা খাতুন টাকা দিয়েছেন আব্দুল কাউয়ুমকে। মারুফা ইয়াসমিন বলেন, কাউয়ুম স্যারকে দফায় দফায় সাত হাজার টাকা দিছি। নারগীস আক্তার দিয়েছেন ২ হাজার টাকা, ফাতিমা আক্তার ২ হাজার টাকা। এভাবে ১৪১ শিক্ষকের কাছে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা উত্তোলন করা হলেও নিজেদের বিল না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
উৎকোচ আদায়ের বিষয়টি ২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. চঞ্চল মাহমুদ ও মালিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান স্বীকার করে বলেন, ফটোকপি ও এদিক সেদিক যাওয়া-আসাতে খরচ হয়েছে। তবে আব্দুল কাউয়ুমকে মুঠোফোনে কল দিলে সাংবাদিকের পরিচয় পেয়ে ব্যস্ততা দেখিয়ে কলটি কেটে দেন তিনি।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মোমিনুল হক বলেন, যে কাজের জন্য অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে সেখানে কোন অর্থের প্রয়োজন নেই। আমি শুধু কাগজে স্বাক্ষর করেছি। কে অর্থ উত্তোলন করেছে, কেন করেছে কিছুই জানি না।
বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে