শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ইন্দিলপুর আব্দুল মজিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আবুল হাসেমকে ১০ বছরের বেতন ফেতর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জাল সনদে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির বিষয়টি ধরা পড়ার পর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর তাকে চিঠি দিয়ে এ নির্দেশ দেয়।
এদিকে চিঠি দেওয়ার প্রায় ৪ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও ওই শিক্ষক এখনও বেতন ফেরত দেয়নি একটি টাকাও। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, শিক্ষক মো. আবুল হাসেম বিদ্যালয়টিতে গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ে পাঠদান করাতেন। ২০১৫ সালের জুন মাস থেকে বিএড সনদের মাধ্যমে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির মাধ্যমে উচ্চতর বেতন স্কেলে বেতন-ভাতা পান। এদিকে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির ১০ বছর পর জানা যায়, সেই বিএড সনদটি ছিল জাল। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিরিক্ষায় সেটা প্রমাণিত হয়।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত ২৩ মার্চ বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের কাছে একটি চিঠি পাঠায়। সেই চিঠিতে জানানো হয়, মো. আবুল হাসেম বিএড জাল সনদের মাধ্যমে উচ্চতর স্কেল প্রাপ্ত হয়েছেন। তাই ২০১৫ সালের জুন মাস থেকে ২০২৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত মোট ৯ বছর ১০ মাসের বেতন সরকারি কোষাগারে চালানের মাধ্যমে ফেরত দিতে বলা হয় তাকে।
এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা বলেন, স্কুলের শিক্ষকই যদি জালিয়াতি করেন, তাহলে তার কাছ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা কি শিখবে? এমন শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। শুধু বাড়তি টাকা ফেরত নেওয়া- এমন গুরুতর অপরাধের শাস্তি হতে পারে না।
শিক্ষক মো. আবুল হাসেমের কাছে অর্থ ফেরত প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বলেন, 'লাখ খানেক টাকা ফেরত দিয়েছি। আর বাকিগুলো দিয়ে দিব।” তবে হিসাব শেষ করে টাকা ফেরতের কথাও জানান তিনি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মঈনুল হক বলেন, কত টাকা ফেরত দিতে হবে, তার হিসাব-নিকাশ চলছে। একজন অভিজ্ঞ লোক দিয়ে হিসাব করানো হচ্ছে। হিসাবের কাজ শেষ হলেই খুব তাড়াতাড়ি টাকাটা ফেরত দেওয়া হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল আলম তালুকদারবলেন, "শিক্ষক আবুল হাসেম অর্থ ফেরত দেওয়ার কোন ডকুমেন্ট আমাকে দেখাতে পারেননি। আমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথেও এ বিষয়ে কথা বলেছি। ৭ দিনের মধ্যে হিসাবের কাজ শেষ করে মোট টাকার পরিমাণটা কত হয়, তা জানাতে বলেছি।"
বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে