ধরাছোঁয়ার বাইরে মুলহোতা মোস্তফা কামাল

সম্রাট হোসাইন,পঞ্চগড়
২৯ জুন ২০২৫

 

পঞ্চগড়ে জালিয়াতি করে ভারতীয় নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির মুলহোতা মো. মোস্তফা কামাল এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। পরিচয়পত্র দুটি নির্বাচন কমিশন ব্লক করে দিলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি জড়িতদের বিরুদ্ধে।

এদিকে আইনের আওতায় না নেওয়ায় মোস্তফা কামাল ভারতীয় ওই নাগরিকদের কাছে জমি লিখে নেওয়ার পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে মোস্তফা কামালসহ চক্রের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবী স্থানীয়দের।

ভারতীয় নাগরিক ভবেন্দ্র নাথ রায় প্রধান বজেন্দ্র নাথ রায় প্রধান জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি থানার পশ্চিম মাগুরমারী গ্রামের মৃত জলধর রায়ের ছেলে। মোস্তফা কামাল তাদেরকে ভারত থেকে পার্সপোট ভিসায় নিয়ে আসে জালিয়াতির মাধ্যমে বোদা মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের জায়গীরপাড়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা সাজিয়ে চেয়ারম্যান, সচিব, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড ইউপি সদস্য পরিষদের হিসাব সহকারীর সহযোগিতায় স্থানীয় দুই ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন সনদ ঘষামাজা করে ভারতীয়দের জন্ম নিবন্ধন করে দেন। হোল্ডিং ট্যাক্সের কাগজ নেয় এবং পরিষদ থেকে নাগরিকত্ব সনদ দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের আবেদন করলে বাংলাদেশী জাতীয় পরিচয়পত্র পায় তারা।

বাংলাদেশের পরিচয়পত্রে ভবেন্দ্রের নম্বর ১০৪৬৭৪৬২২৬ এবং বজেন্দ্রের এনআইডি নম্বর ৭৩৭৯১১৩০৭৪। অথচ তাদের দুই ভাইয়ের ভারতের নির্বাচন কমিশনের পরিচয়পত্র আছে। ভবেন্দ্রের আধার নম্বর ৪৪১৭০৩৯৫৪৩৯৪ এবং ভোটার নম্বর ডই/০৩/০১৫/২২২৪৯০। বজেন্দ্রের আধার নম্বর ৬৪৬৭২৫৮০৯৪৩৪ এবং ভোটার নম্বর ৩৫৩৪৪২৭।

পরবর্তীতে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে দেবীগঞ্জ উপজেলার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়ন থেকে ওয়ারিশ সনদ নেয়। পাসপোর্টের জন্য আবেদন, মোবাইল সিম কার্ড গ্রহণ,কৃষি ব্যাংকে হিসাবসহ আয়কর ফাইল খুলেছেন।ভারতীয়দের ব্যবহার করে মোস্তফা কামাল তাদের কাছ থেকে স্থানীয়দের ভোগদখলি বন বিভাগের জমি লিখে নেওয়ার জন্য দলিল প্রস্তুত করেন। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় তারা জমি লিখে না দিয়ে টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। এমন অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা করেন মোস্তফা কামাল মিরাজ মোহাম্মদ তারেকুল হাসান নামের দুজন।

মোস্তফা কামাল দেবীগঞ্জ রামগঞ্জ বিলাসি মেলাপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে। মিরাজ মোহাম্মদ তারেকুল হাসান নোয়াখালি কবিরহাট পৌরসভার মোহাম্মউল্লাহ বিএসসি বাড়ী মোহাম্মদ উল্লাহর ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, মোস্তফা কামাল আগে মিরাজের পরিচয় দিয়েছিল ফ্যাসিস্ট সরকারের সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাগিনা হিসেবে। বর্তমান পরিচয় দিচ্ছে বিএনপির লোক। তারা বলেন, ভারতীয় ওই দুই নাগরিকের বাবা বাংলাদেশে দেশ ভাগের আগে ছিল। তাদের কিছু জমি ছিল। সেটা স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করে ভারতে চলে যায়। এখন কয়েক যুগ পরে তার দুই ছেলে বাংলাদেশে আসে। মোস্তাফা কামাল জালিয়াতি করে তাদের এনআইডি করে দিয়ে জমি রেজিস্ট্রেশন করে নেওয়ার পায়তারা করছে। মোস্তফা কামাল জমির বিরোধে মামলা করতে না পেরে রাজনৈতিক মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে নিরীহ মানুষদের। মোস্তফা কামাল মিরাজ মোহাম্মদ তারেকুল হাসান নাসিরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবী জানিয়েছেন তারা। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোস্তফা কামাল মুঠোফোনে কোন কোথা বলেতে রাজি হননি।

 

বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে



মন্তব্য
জেলার খবর