প্রবাসী রাসেলের মানবিকতায় বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছেন ৪ পরিবারের ৪ মানুষ

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
১৭ জুন ২০২৫

 

নাটোরের গুরুদাসপুরে টাকার অভাবে চিকিৎসা বঞ্চিত অসহায় পরিবারকে লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছেন রাসেল হোসাইন নামের এক আমেরিকা-প্রবাসী। এ টাকা হাতে পেয়ে ওই পরিবারগুলোর ৪ জন অসুস্থ মানুষ বেঁচে থাকার নতুন স্বপ্ন দেখছেন।

মঙ্গলবার (১৭জুন) উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স মিলনায়তনে ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে এ সহায়তার অর্থ তুলে দেন প্রবাসী রাসেলের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. রবিউল ইসলাম তার ছোট ভাই ব্যবসায়ী গোলাম রাব্বানী।

ভুক্তভোগীরা হচ্ছেন- স্থানীয় ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত রঞ্জনা রানী, গুরুতর আহত কৃষক বুদ্দু মিয়া, চোখের আলো হারাতে বসা শ্রমজীবী নারী আমেনা বেগম এবং বিধবা সুকজান বেওয়া।

রঞ্জনা রানী গুরুদাসপুর বাজারপাড়ার বাসিন্দা, চিকিৎসার জন্য ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে গিয়েছিলেন। কিন্তু অর্থ সংকটে থেমে যায় তার চিকিৎসা। সংবাদমাধ্যমে খবরটি উঠে আসলে রাসেল হোসাইন তাঁর চিকিৎসার জন্য লাখ টাকা সহায়তা দেন।

অন্যদিকে বিলহরিবাড়ী গ্রামের কৃষক বুদ্দু মিয়া মাঠে কাজ করতে গিয়ে পায়ে মারাত্মক আঘাত পান। অর্থাভাবে চিকিৎসা না করাতে তিনি পঙ্গুত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। মাত্র ৪০ হাজার টাকার প্রয়োজন থাকলেও পরিবার তা জোগাড়ে অক্ষম। রাসেল হোসাইন সেই অর্থ দিয়ে তাঁর চিকিৎসার সুযোগ তৈরি করে দেন।

সাবগাড়ী এলাকার নারী শ্রমিক আমেনা বেগম, ধান মাড়াইয়ের সময় দুর্ঘটনায় এক চোখে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছিলেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মাত্র ৩০ হাজার টাকায় অপারেশনে তার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব। রাসেল হোসাইন দেরি না করে তাঁর অপারেশনের জন্য সেই অর্থ প্রদান করেন।

এছাড়াও, একই এলাকার নিঃসন্তান বিধবা সুকজান বেওয়া নানা রোগে ভুগছেন। কিন্তু চিকিৎসা করানো তার পক্ষে সম্ভব নয়। রাসেল হোসাইন তাকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে তার পাশে দাঁড়ান।

কৃষক বুদ্দু মিয়া বলেন, “আমি ভাবতাম, গরিবের কষ্ট কেউ দেখে না। রাসেল ভাই না থাকলে হয়তো কোনদিন হাঁটাই হতো না। আল্লাহ তাকে অনেক ভালো রাখুক।

রঞ্জনা রানী বলেন, “আমার চিকিৎসা থেমে গিয়েছিল। ভেবেছিলাম, আর ফিরতে পারব না। রাসেল হোসাইনের সাহায্য আমার জন্য নতুন জীবনের প্রেরণা। আমি তার চিরঋণী।

রাসেল হোসাইন বলেন, “মানুষ মানুষের জন্যএই বিশ্বাস থেকেই আমি কাজ করি। আমার সামান্য সহযোগীতা যদি কারও জীবন রক্ষা করতে পারে, সেটাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। দেশ থেকে দূরে থাকলেও দেশের মানুষের পাশে থাকতে চাই সবসময়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “আমরা যে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি, সেই দেশের মানুষ যদি কষ্টে থাকে, তবে সেটা আমরা মেনে নিতে পারি না। আমার ছেলের এই মানবিকতা একজন মুক্তিযোদ্ধা পিতার জন্য গর্বের।

 

বিডি২৪অনলাইন/সাজেদুর রহমান সাজ্জাদ/সি/এমকে

 



মন্তব্য
জেলার খবর