আ.লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক
১২ মে ২০২৫

 

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং দেশের ফৌজদারি আদালতে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও তারসব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সোমবার (১২ মে)  স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০০৯ সালের জানুয়ারি সরকার গঠনের পর থেকে গত আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও তার সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সদস্য ভিন্নমতের মানুষের ওপর হামলা, গুম, খুন, হত্যা, নির্যাতন ধর্ষণসহ বিভিন্ন নিপীড়নমূলক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। এর মাধ্যমে সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে তারা। গত ১৫ জুলাই থেকে ০৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে গুম, খুন, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, গণহত্যা, বেআইনি আটক, অমানবিক নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাসী কার্য মানবতাবিরোধী অপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগ দেশি আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠিতও হয়েছে। তাই এসব অপরাধের অভিযোগে আওয়ামী লীগ ও তার সব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং দেশের ফৌজদারি আদালতে বহুসংখ্যক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এসব মামলার বিচারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, দেশের সংহতি, জননিরাপত্তা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার লক্ষ্যে গত আগস্ট পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ এবং তার সব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কর্তৃক গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, উসকানিমূলক মিছিল আয়োজন, রাষ্ট্রবিরোধী লিফলেট বিতরণ এবং ভিনদেশে পলাতক তাদের নেত্রীসহ অন্য নেতাকর্মী কর্তৃক সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অপরাধমূলক বক্তব্য প্রদান, ব্যক্তি প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের প্রচেষ্টাসহ আইনশৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। দলটি এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার বাদী সাক্ষীদের মনে ভীতির সঞ্চার করা হয়েছে। এভাবে বিচার বিঘ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।  এ অবস্থায় সার্বিকভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, আওয়ামী লীগ ও তারসব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল অকার্যকর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকাসহ জনমনে ভীতি সঞ্চারে সন্ত্রাসী সংগঠনের মতো বিভিন্ন বেআইনি কার্যকলাপ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তাই সরকার যুক্তিসংগতভাবে মনে করে সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর ধারা-১৮() প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ ও তার সব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটি এবং এর সব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা সমীচীন।

আওয়ামী লীগসহ এর সব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের যে কোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে কোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এটা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

 

বিডি২৪অনলাইন/এনআরডি/এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর