বাংলাদেশি তরুণীকে নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ায় মিথ্যাচার, বিব্রত বাবা-মাসহ এলাকাবাসী

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪

বিএসএফের হাতে আটক পঞ্চগড়ের প্রিয়ন্তী রায় প্রমি নামের এক তরুণীকে নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ায় মনগড়া গল্প প্রকাশ করায় রীতিমতো বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন ওই তরুণীর বাবা-মাসহ এলাকাবাসী। তারা বলছেন, খবরে যা বলা হয়েছে তা পুরোপুরি সর্বৈব মিথ্যা, বাস্তবতার সঙ্গে কোনো মিল নেই। ওই তরুণী কখনোই ইসকন ভক্ত ছিল না। তাকে টর্চার করা হয়নি, সে তার নিজের ইচ্ছায় ভারতে গিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশের কারণে আটক হয়েছে। তাছাড়া খবরে প্রকাশিত তরুণীটির নামটাও তার প্রকৃত নাম নয়।

প্রমির বাড়ি পঞ্চগড় সদরের উত্তর জালাসি পাড়া গ্রামে। গত মঙ্গলবার ভারতের উত্তর দিনাজপুর ফতেপুর বিওপি দিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশের সময় বিএসএফ তাকে আটক করে। এরপর তাকে চোপরা থানা পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।

এদিকে ভারতীয় মিডিয়া 'মাধ্যম' প্রচার করছে,  অর্পিতা (প্রিয়ন্তী রায় প্রমি) ইসকন ভক্ত, তার বাবা ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি। প্যারালাইজড আক্রান্ত মা খুবই অসুস্থ। বাংলাদেশ তাদের জন্য অনিরাপদ। তাই ওই তরুণীকে নিরাপদের জন্য ভারতের আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন তার বাবা-মা। যদিও ওই ভিডিওতে প্রমির কোনো বক্তব্য ছিল না। মাধ্যম আরও  প্রচার করছে, বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুরা খুবই বিপদে,হিন্দুদের উপর সরকারি আক্রমন চলছে। বিমাতা সুলভ আচরন করছে পুলিশও। তাই তারা প্রানভয়ে আইন ভেঙে ভারতে নিরাপত্তার জন্য আসছে।

 এদিকে পঞ্চগড়ের স্থানীয় হিন্দু নেতারা বলছেন, জেলায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজমান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিন্দু-মুসলাম নির্বিশেষে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক উপস্থিতির মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু, সুন্দর পরিবেশে চলছে পাঠদান, খেলাধুলা। স্বাভাবিক নিয়মে চলছে পূজা-অর্চনাসহ দৈনন্দিন কাজকর্ম। পূর্ব পুরুষের আমল থেকেই তারা হিন্দু-মুসলমান পরস্পর সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে শান্তিতে বসবাস করছেন।

প্রিয়ন্তী রায় প্রমির বাবা জয়দেব চন্দ্র রায় ও তার মা অনুরাধা রানী বলেন, আমরা এখানে হিন্দু-মুসলিম মিলেমিশে বসবাস করছি। কোন সমস্যা নেই। আমরা ইসকন ভক্ত না। ভারতীয় মিডিয়া ভুয়া মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ প্রচার করছে।।প্রমি আমাদেরকে না জানিয়ে চলে গেছে।

পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় শারদীয় দূর্গাপুজা মন্ডপ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী মনোরঞ্জন বনিক বলেন,বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া যা প্রচার করছে তা মিথ্যা বানোয়াট। বর্তমান সময়ে আমরা নিরাপদে আছি, ভালো আছি। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বিশ্বজিৎকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা কোন প্রতিবাদ করতে পারিনি তখন।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সি জানান, খবর পেয়ে ওই তরুণীর বাসায় গিয়ে খবর নেওয়া হয়েছে। তার বাবা-মা সম্পুর্ন সুস্থ।তারা ইসকন ভক্ত না, মুলত তরুণী নিজেই অসুস্থ, ভিসা ছাড়া চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে আটক হয়েছে সে।

 

বিডি২৪অনলাইন/সম্রাট হোসাইন/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর