ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচার করা হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে এ লুটপাটের সঠিক পরিমাণ নির্ণয়ের কাজ চলমান রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আত্মসাৎকৃত অর্থের পরিমাণ লক্ষাধিক কোটি টাকার উপরে। কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী ব্যক্তি এর সঙ্গে জড়িত। আত্মসাৎকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারে ইতোমধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৮ আগস্ট) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ না করা হয়নি বিজ্ঞপ্তিতে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এ ধরনের দুর্নীতি ও অর্থপাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইতোমধ্যেই সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংকের পর্ষদগুলো পুনর্গঠন করা হয়েছে। বাকি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংস্কার কার্যক্রমও শুরু হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত অর্থের প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। আত্মসাৎকৃত অর্থের প্রকৃত পরিমাণ নির্ণয়ে অডিট কার্যক্রম শুরু হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যাংকগুলোর নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইউই, সিআইডি ও দুদকের সহায়তা নিয়ে আত্মসাৎকারীদের স্থানীয় সম্পদ অধিগ্রহণ ও বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে। অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে ইতোমধ্যেই বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার সহায়তা চেয়ে যোগাযোগ শুরু করেছে সরকার।
শিগগির ব্যাংকিং কমিশন গঠনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। জানানো হয়েছে, কমিশন সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ব্যাংকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত চিত্র প্রকাশ করবে। ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠনের জন্য ছয়মাসের মধ্যে একটি বাস্তবায়নযোগ্য রোডম্যাপ প্রণয়ন করবে এ কমিশন।
সব আর্ন্তজাতিক মানদণ্ড পরিপালনে সক্ষম একটি শক্তিশালী ব্যাংকিং খাত গড়ে তোলাই বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের লক্ষ্য উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ জন্য সফল করতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সময়, আন্তর্জাতিক কারিগরি সহায়তা ও অর্থের প্রয়োজন হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকার অর্থ আত্মসাৎকারীদের দেশি-বিদেশি সম্পদ অধিগ্রহণ এবং পাচার করা অর্থ ফেরত এনে ব্যাংকগুলোকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে। ব্যাংকগুলোর এ পুনর্গঠন এবং আর্থিক খাতের কাঠামোগত সংস্কার সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হলেও সরকার দেশের আর্থিক খাতকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
বিডি২৪অনলাইন/ই/এমকে