পঞ্চগড়ে সরকারি বরাদ্দ ঠিক মতো পায়নি চাষীরা

সম্রাট হোসাইন,পঞ্চগড়
২২ এপ্রিল ২০২৪

ছবি- প্রতিনিধি

সরিষা প্রদর্শনীর আন্তঃপরিচর্চা, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে প্রণোদনা, মডেল কৃষি বাড়ি প্রযুক্তি প্রদর্শনীর বরাদ্দ ঠিক মতো পায়নি পঞ্চগড়ের সদর উপজেলার কৃষকরা। এনিয়ে তাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা যেমন বিরাজ করছে, তেমনি সরকারের উদ্দেশ্যে ব্যাহত হচ্ছে। এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

কৃষকদের ভাষ্য, উপজেলা কৃষি অফিসার মো.কামাল হোসেন সরকারের খামখেয়ালীপনা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে তারা পুরো সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অথচ তাদের নামে এ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সরকার থেকে। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন, কৃষি কর্মকর্তার শাস্তি চেয়েছেন। সেই সঙ্গে নিম্নমানের বীজ  না দেওয়ার দাবী তাদের।

ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, দিনাজপুর টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আওতায় সরিষা প্রদর্শনীর আন্তঃপরিচর্চার জন্য হাজার করে টাকা দেওয়ার কথা। কিন্তু তারা সেটা পাননি। কৃষি প্রনোদনার আওতায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ আবাদে বীজ বাবদ বরাদ্দ ছিল হাজার ৭৭৬ টাকা, সারের জন্য ৭৪০ টাকা অন্যান্য অনুদান হাজার ৪৮৪ টাকা। কিন্তু তাদের দেওয়া হয়েছে হাজার ৬শ টাকা দামের কেজি পেঁয়াজের বীজ, টিএসপি ২০ কেজি, ডিএপি ২০ কেজি, একটি বালাইনাশক, পলিথিন, রশিসহ হাজার ৭শ টাকা।

ভুক্তভোগীরা আরও জানান, মডেল কৃষি বাড়ি প্রযুক্তি প্রদর্শনীতে বরাদ্দ ২০ হাজার টাকা। কিন্তু শাক সবজির বীজ, কয়েকটি ফলের গাছ, এক বস্তা জৈব সার দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।

কুচিয়ামোড় এলাকার রফিকুল ইসলামের স্ত্রী বলেন, কৃষি অফিস থেকে পেঁয়াজের যে বীজ দিল, সেটায় পেঁয়াজ হয়নি, শুধু গাছ। অথচ বাজার থেকে কিনে যে বীজ বোপন করেছি, তার ফলন খুবই ভালো হয়েছে। একই কথা জানান ইমাম জায়েদ।

মালচিং চাষে তালিকাভুক্ত চাষী প্রতি বরাদ্দ ২০ হাজার ৮৩৫ টাকা। কিন্ত কেউ পেয়েছে ৩৫ কেজি সার, কেউ আবার ৭৫ কেজি। সঙ্গে চার প্যাকেট শশা বীজ, ফাঁদ, তাবীজ। সেটাও কেউ পেয়েছে, কেউ পায়নি। জিপসাম, বোরন,জিংক সার বিতরণের অবস্থাও একই। টাকা পেয়েছে কেউ দেড় হাজার, আবার কেউ হাজার। জৈব কৃষি সবজি উৎপাদনে ১৫ হাজার টাকা বরাদ্দ। কিন্ত বেগুন বীজ, কেঁচো জৈব সার বস্তাসহ নগদ হাজার টাকা পেয়েছেন চাষীরা। বাকি টাকা কোথায়, সেটা জানে না ‍চাষীরা।

এদিকে খোজ নিয়ে জানা গেছে, সার ডিলার নিয়োগ সার বিতরণ সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা যথাযথ অনুসরণ করা হয়নি এ উপজেলায়। এ নীতিমালা অনুযায়ী পরপর দুবার সার উত্তোলনে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ডিলারের জামানত বাজেয়াপ্তসহ ডিলারশীপ বাতিল করার বিধান। কিন্তু এ শর্ত ভাঙার পর সংশ্লিষ্ট ডিলারের নাম বাদ দিয়ে তাদের স্ত্রীর নামে ডিলারশীপ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এমন ডিলারের মধ্যে আছে- মেসার্স শামীম ট্রেডার্স, মেসার্স মামুন ট্রেডার্স।

সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো.কামাল হোসেন সরকার জানান, বরাদ্দ যা ছিল তাই দেওয়া হয়েছে।কৃষক টাকা না পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। পেঁয়াজের বীজের বরাদ্দ ছিল হাজার ৭৭৬ টাকা, দেওয়া হয়েছে ২হাজার ৬শ টাকা-এ প্রশ্নের জবাব না দিয়ে ব্যস্ততা দেখিয়ে তিনি ফোন সংযোগ করে দেন।

 

বিডি২৪অনলাইন/ই/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর