করতোয়া নদীর চর দখলের পায়তারা

সম্রাট হোসাইন,পঞ্চগড়
০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

পঞ্চগড়ে করতোয়া নদীর চর দখলের পায়তারা চলছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। ফুওয়াং বোলিং সার্ভিসিং নামের একটি কোম্পানি এ অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তারা। চর দখল হলে কোম্পানির বর্জ্যে দূষিত হবে নদী, সংকটে পড়বে স্থানীয় কৃষকসহ হিন্দু সম্প্রদায়, এমনটাই মনে করছেন তারা।

এদিকে অনেকটা চর দখলের খবর পেয়ে ইতোমধে সেখানে কোম্পানিটির চলমান কাজ বন্ধ করে দেয়াও হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.শরীফুল আলম

স্থানীয়রা জানান, নদীর হাজারের বেশি মিটার চর দখল করে সেখানে চলছে মাটি ভরাট, বাউন্ডারি প্রাচীরের খুঁটি স্থাপন। নদীতে ড্রেজার মেশিন আর স্কেভেটর বসিয়ে মাটি ভরাট চলছে ধুমধাম। কেউ বলছেন পাওয়ার প্লান্ট, কেউ বলছেন গার্মেন্টস হচ্ছে এখানে।

এলাকাবাসী আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরেই কোম্পানিটি এ চর দখলের অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। চর দখলে বাঁধা দিলে স্থানীয় কয়েকজনের নামে মামলাও করেছে তারা।

স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলেন, চরটির একপাশে আমরা শ্মশানঘাট হিসেবে ব্যবহার করছি। যেভাবে চর দখল করে প্রাচীর দেওয়া হচ্ছে তাতে আমাদের শ্মশানঘাট যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এরপরে লাশ নিয়ে আমরা কোথায় যাবো? স্থানীয়রা নদীর চর দখল বন্ধের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, শালডাঙ্গা ইউনিয়নের চরপাড়ার উত্তরদিকে শুরু করে দক্ষিণ দিকে অমরখানা দেবত্তর পাড়া পর্যন্ত হাজার ২০০ মিটার লম্বা মোট ১৬৮ একর নদীর চর দখল করা হয়েছে। নদীর মাঝামাঝি দেওয়া হয়েছে ১৫-২০ ফুট প্রস্থের একটি ড্রেন। বাউন্ডারি প্রাচীরের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে আরসিসি খুঁটি। মাটি ভরাটের জন্য নদীতে বসানো হয়েছে ড্রেজার মেশিন স্কেভেটর।

 

অমরখানা দেবত্তর পাড়া এলাকার জয়কুমার পাল জানান, করতোয়া নদীর বিশাল একটি চর কোম্পানির নামে দখল করা হচ্ছে। নদীর চর সরকারি খাস জমি। কিন্তু কিভাবে তারা দখল করছে। আমরা তাদের কাছে নিরুপায়।

স্থানীয় আমিনুল ইসলাম,ধনঞ্জয় জানান- চরে আমরা রসুন, পেঁয়াজ, মরিচ, ভুট্টা, ধান চাষ করছি। যেভাবে নদী দখল হচ্ছে, আর আবাদ করা সম্ভব হবে না। নদী থেকে আমাদের খাদ্যের যোগান ছিল,এখনতো আর সেটা হবেনা। এটা বন্ধের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

ফুওয়াং বোলিং সার্ভিসিং লিমিটেডের মো.কালাম জানান, ১৬৮ একর জমি ক্রয় করা হয়েছে। ২ হাজার ২০০ মিটার ছাড়াও নদীর ওপারে আরো কিছু জমি আছে। তবে তার ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ নদীর চর দখল বিষয়ে কথা বলতে নারাজ।

পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশুতোষ বর্মন জানান, চরটির বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটি আমাদের মতামত চেয়েছে। আমরা তাদের কাছে সাইট প্লান,লেআউট প্লান চেয়েছি। তারা এসব দিলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হবে। তাদের মতামতের পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শরীফুল আলম জানান, নদীর চর দখল করে নিয়েছে বিষয়টা এমন না। আমরা শুনেছি কিছু জমি কিনে তারা মাটি ভরাট করছে। অনেকটা চর দখল করার খবর পেয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরেজমিনে দেখে তাদের কাজের অনুমতি দেওয়া হবে।

 

বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর