খেলাপি ঋণ বেড়ে ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৮ জুন ২০২৫


চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক শেষে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে  লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। এ টাকা বিতরণ করা মোট ঋণের ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। হিসাব অনুযায়ী, এক বছরের ব্যবধানে এ ঋণ বেড়েছে লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা, আর তিন মাসে বেড়েছে ৭৪ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। রোববার (১৫ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হালনাগাদ বিবরণী থেকে বিষয়টি জানা গেছে।

দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র সামনে আসছে মুলত খাত বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি নিয়মনীতি কঠোরভাবে প্রয়োগের কারণে। কেননা এতদিন যেসব ঋণ পরিশোধ না করলেও কাগজে-কলমেনিয়মিত বাভালো হিসেবে দেখানো হতো, সেগুলোই এখন রূপ নিচ্ছে মন্দ ঋণে।  রাজনৈতিক প্রভাব, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিতর্কিত ঋণগুলো এখন দৃশ্যমান হচ্ছে। ফলে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। এমনটাই বলছেন ব্যাংখ খাত সংশ্লিষ্টরা।

তথ্য অনুযায়ী, মার্চ শেষে মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ স্থিতি ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণই আছে লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। গত বছরের মার্চ প্রান্তিকে শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। এ টাকা  বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ১১ শতাংশ।

এদিকে ডলার সংকটের কারণে  আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ)দারস্ত হয় বাংলাদেশ। সেখান থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের তিনটি কিস্তি পাওয়া গেছে। বাকি দুটি কিস্তি শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ধাপে ধাপে দেবে সংস্থাটি। শর্তের মধ্যে রয়েছে ২০২৬ সালের মধ্যে বেসরকারি খাতে খেলাপি ঋণ শতাংশ এবং সরকারি ব্যাংকে ১০ শতাংশের নিচে নামাতে হবে।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ শেষে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণ তিন লাখ ১৯ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা। এর ৪৫ শতাংশই খেলাপি। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণের পরিমাণ ১৩ লাখ ১০ হাজার ৩৮৪ কোটি টাকা। এর মদ্যে ২০ দশমিক ১৬ শতাংশ খেলাপি।  বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ঋণের পরিমাণ ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনকালে মোট খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। এরপর থেকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে চলছে। তৎকালীন সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাট হয়েছে। এর বড় অংশই বিদেশে পাচার হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।

বিডি২৪অনলাইন/ইএন/এমকে



মন্তব্য
জেলার খবর