আগামী ২ জুন আগামী অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা হবে। এবারের বাজেটে খাদ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ৯ গুণের বেশি বাড়িয়ে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা করা হতে পারে এ খাতের বরাদ্দ। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন এবং খাদ্য মজুত ও বিতরণ ব্যবস্থা সুসংহত করতেই খাদ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে গেল বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সরকারি এক তথ্যবিবরণীতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, জাতির উদ্দেশে আগামী ২ জুন আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
জানা গেছে, দায়িত্ব নেওয়ার পর বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার খাদ্য নিরাপত্তার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। খাদ্যের সংকট কোনো পরিস্থিতিতেই যাতে সৃষ্টি না হয়, তার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই খাদ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজাটে খাদ্য খাতের বরাদ্দ প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় অনেক বাড়ানো হয়েছে।
দেশে দীর্ঘদিন ধরে বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ কিছুটা চাপে রয়েছে। সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকার আগামী অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। এ কারণে খাদ্য খাতের বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়ানোরও পরিকল্পনা হচ্ছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে খাদ্য খাতে বরাদ্দ মাত্র ১১৯ কোটি টাকা। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হতে পারে। সে হিসাবে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ছে ৯৮১ কোটি টাকা বা ৯ দশমিক ২৪ গুণ। যদিও চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে খাদ্য খাতের বরাদ্দ বাড়িয়ে ১ হাজার ৮ কোটি টাকা করা হয়। এ হিসাবেও আগামী অর্থবছরে খাদ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ছে।
এদিকে পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, গেত এপ্রিল শেষে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। মার্চে ছিল ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। গত নভেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১ দশমিক ৩৮। এরপর গত জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়। ফেব্রুয়ারিতে আরও কমে হয় ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে দাঁড়ায়। তাই উচ্চ মূল্যস্ফীতি থেকে আগামী অর্থবছরে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা করছে বর্তমান সরকার। আগামী অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিতে পারেন অর্থ উপদেষ্টা। সেই সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১ লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দে ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
ওদিকে খাদ্য সহায়তা ও টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে খাদ্যপণ্য বিক্রির আওতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। এ জন্য খাদ্য সহায়তা খাতে ভর্তুকি বাবদ ১০ হাজার কোটি টাকা এবং টিসিবির ভর্তুকি বাবদ ১৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হতে পারে। চলতি অর্থবছরে এ দুই খাতে বরাদ্দ যথাক্রমে ৭ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা ও ১৯ হাজার কোটি টাকা।
নতুন অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিতে পারেন অর্থ উপদেষ্টা। এ বাজেটের অঙ্ক চলতি অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। ফলে স্বাধীনতার পর এবারেই প্রথম, আগের বছরের তুলনায় নতুন বাজেটের আকার ছোট হচ্ছে।
বিডি২৪অনলাইন/ইএন/এমকে