পঞ্চগড়ে অপুলেন্ট ই-কমার্স নামের একটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের ফুড সাপ্লিমেন্ট পণ্য ঔষধ হিসেবে বিক্রি করছে একটি চক্র। রোগ সেরে যাওয়ার আশায় তাদের কাছে থেকে ঔষধ হিসেবে উচ্চ দামের এসব পণ্য কিনে আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন অনেকে। পুরো চক্রটি নিয়ন্ত্রণ করছেন বানিয়াপট্টি এলাকার রায় হোমিও হলের চিকিৎসক সত্যেন্দ্র নাথ রায়। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে ও অনুসন্ধানে জানা গেছে এ তথ্য।
জানা গেছে, ভারতীয় এসব ফুড সাপ্লিমেন্ট পণ্য কালো বাজার বেনাপোল হয়ে বাংলাদেশে আসে। জন্ডিস থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস, লিভার, হাড়ক্ষয়, দৃষ্টিশক্তি, জ্বর, কাশি, কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস, কোলেস্টেরল, ওজন কমানো, উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। নতুন রোগীদের দেওয়া হয় অল ইন ওয়ান নামের একটি বোতল। বোতলের দাম নেওয়া সাড়ে ৪ হাজার টাকা। বোতলের গায়ে কোনো মূল্য উল্লেখ নেই।
এ চক্রের জালে কর্মী হিসেবে আটকে গেছে বেকার যুবক-যুবতি থেকে শুরু করে স্বামী পরিত্যক্ত নারী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও চাকুরিজীবিরাও। এমএলএম (ডেসটিনি) সিস্টেম ব্যবহার করে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত কর্মীদের মডিফাই করে থাকে চক্রটি। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা রোগীকে ধরতেহোমিও চিকিৎসকের সহকারি রেজাউল কর্মীদের মডিফাইড করছে। দেওয়া হয় বিভিন্ন প্রলোভন। কোন অভিজ্ঞতা ছাড়াই ডায়াগনস্টিকের যে কোন রিপোর্ট দেখেন কর্মচারী রেজাউল করিম।
হাড়িভাসা এলাকার নিরলা রায় বলেন, তার পেটে পাথর হয়েছে। স্থানীয় শহিদুল নামের এক বয়স্ক লোকের মাধ্যমে চিকিৎসকের কাছে আসেন তিনি। এরপর ১১ হাজার ৭০০ টাকা দিয়ে দেড় মাস ঔষধ খেয়েছি। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। পরে আরো ৫ মাস ঔষধ খেতে বলেছেন তারা।
মোহাম্মদ আলী বলেন, তার কোমরে ব্যাথা। লোকের কথায় বিশ্বাস করে ৫ হাজার টাকা দিয়ে ঔষধ নিয়ে কোন কাজ হয়নি। এমদাদুল হক বলেন তার পায়ের ব্যাথা। সাড়ে ৪ হাজার টাকা দিয়ে এক বোতল ঔষধ খেয়ে সাড়েনি। পরে আবার আরেকটা নিয়েছি। তবে মনে হয় না সারবে। একই অবস্থাই আব্দুল জব্বার,শাহজাহান,রবিসহ আরো একাধিক ভুক্তভোগীর।
অভিযুক্ত হোমিও চিকিৎসক সত্যেন্দ্র নাথ রায় ফুড সাপ্লিমেন্ট পণ্যকে ঔষধ না বলতে তার লোকজন সবাইকে সতর্ক করার আশ্বাস দেন তিনি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন সিভিল সার্জন ডা.মিজানুর রহমান।
বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে