জুলাই গণ অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ডিসেম্বর থেকে গত অক্টোবর পর্যন্ত ১১ মাসে প্রায় ২৬ হাজার ১৩ কোটি টাকার বেশি স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এসব সম্পদ দেশে-বিদেশে দুর্নীতিবাজ, অর্থপাচারকারী, সরকারি লোপাটকারী এবং ঋণখেলাপিসহ তিন শতাধিক ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় আদালতের নির্দেশনায় ওই সব সম্পদ ক্রোক বা অবরুদ্ধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে প্রায় ৩ হাজার ৪৫০ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করা হয়। সেই হিসাবে গেল ১১ মাসে বিতর্কিত সম্পদ ক্রোক ও ফ্রিজে নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছে দুদক।
আদালত ও দুদকের সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্র জানায়, গত ১১ মাসে দেশে ৩ হাজার ৪৫৭ কোটি ৮৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ক্রোক করা হয়েছে। আর বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ফ্রিজ করা হয়েছে দেশে ২২ হাজার ২২৬ কোটি ৭৯ লাখ ৩২ হাজার ও বিদেশে ৩২৮ কোটি ৩৮ লাখ ১৩ হাজার টাকা । সব মিলিয়ে দেশে-বিদেশে টাকা ক্রোক ও ফ্রিজ করা হয়েছে ২৬ হাজার ১৩ কোটি ২ লাখ ৯৩ হাজার ।
এ ১১ মাসে বিচারাধীন মামলার মধ্যে ২৪৯টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে সাজা হয়েছে ১২৬টির, জরিমানা আদায় হয়েছে ৫ হাজার ৫৮ কোটি টাকা। এর বাইরে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৩২১ কোটি টাকা। এ সময় খালাস হয়েছে ১২৩টির। ১১ হাজার ৬৩০টি অভিযোগ পাওয়া যায়। এর মধ্যে মাত্র ৯৬০টি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ হয়। বিভিন্ন জায়গায় এনফোর্সমেন্ট হয়েছে ৭৯৮টি। এর মধ্যে অনুসন্ধান হচ্ছে ১৮৮টির, মামলা হয়েছে ২৮টি এবং চারটি ফাঁদ পেতে অভিযুক্তকে ধরা হয়েছে। গণশুনানি হয়েছে ২৩টি।
দুদক জানায়, এ ১১ মাসে মোট ৫১২টি মামলা হয়েছে। এতে ২ হাজার ১৯১ জনকে আসামি করা হয়েছে। চার্জশিট দেওয়া হয়েছে মোট ৩১৫টির। এতে আসামি আছে ১ হাজার ৭৮ জন। মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় ৭৩টি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি অনুসন্ধানে নামে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচার ও দুর্নীতির প্রমাণ পায় সংস্থাটি। এর পরই একের পর এক মামলা করতে থাকে দুদক। অন্যদিকে আদালতের নির্দেশে অভিযুক্তদের সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করা হচ্ছে।
বিডি২৪অনলাইন/এনএন/এমকে