পঞ্চগড়ে ইন্টার্নশিপ বিদ্যালয়ে ডেপুটেশন প্রদান করা হলেও চার মাস ধরে অনুপস্থিত রয়েছে দুই সহকারি শিক্ষক- মো. জিসসিমালাইন ও মনিরুজ্জামান। অথচ তারা পেয়েছেন নিয়মিত বেতন-ভাতা। পাশ করেছেন বিটিপিটি প্রশিক্ষণ পরীক্ষাতেও। শুধু এখানেই শেষ নয়, এদের মধ্যে জিসসিমালাইন যৌতুক মামলায় কয়েকদিন হাজতবাস করলেও তার বিষয়ে নেওয়া হয়নি কোন বিভাগীয় ব্যবস্থা।
জানা যায়, পঞ্চগড় সদর উপজেলার বড়বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০২২ সালে যোগদান করেন সহকারি শিক্ষক মো. জিসসিমালাইন। আর যুগিভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন মনিরুজ্জামান। পরে পঞ্চগড় পিটিআইয়ে জুলাই ২০২৪ থেকে এপ্রিল ২০২৫ সেশনে, পরিমার্জিত ডিপিএড (বিটিপিটি) কোর্সে অধ্যয়নের সময়, পিটিআই এর সুপারিন্টেনডেন্ট হচ্ছেন যুথিকা রানী দাস। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর তার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে শিক্ষক প্রশিক্ষণার্থী মো.জিসসিমালাইন ও মনিরুজ্জামানকে ভিতরগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, জানুয়ারি ২০২৫ হতে এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত চারমাসের জন্য ইন্টার্নশিপ বিদ্যালয়ে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। তাদের প্রতিষ্ঠান নিয়মিত পরিদর্শন করার কথা পিটিআই এর প্রশিক্ষক, জেলা ও উপজেলার শিক্ষা অফিসারসহ সহকারি শিক্ষা অফিসাররা। এদিকে ওই বিদ্যালয়ে ইন্টার্নশিপ ডেপুটেশনে থাকা অবস্থায় শিক্ষক মো. জিসসিমালাইন স্ত্রীর যৌতুক মামলায় ১৩ এপ্রিল জেল হাজতে যায়। পরে ২৩ এপ্রিল জামিনে বের হন ওই শিক্ষক।
সরজমিনে দেখা যায়, ভিতরগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাজিরা খাতায় ওই দুই শিক্ষকের কোন নাম নেই। সেখানকার প্রধান শিক্ষক জাহানারা আফরোজ ও সহকারি শিক্ষকরা জানেন না- সেখানে দুইজন শিক্ষক ডেপুটেশনে পাঠানো হয়েছে।
বিটিপিটি কোর্স শেষে শিক্ষক স্বল্পতার কারণে জেলা শিক্ষা অফিসার এক চিঠিতে ভিতরগড় আনন্দময়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক মো.জিসসিমালাইন ও শালমারা ভিতরগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মো.মনিরুজ্জামানকে বদলি করেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক মো. জিসসিমালাইন মুঠোফোনে জেলহাজতে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়ে ফাঁকি দেইনি। পঞ্চগড় সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মোমিনুল হক বলেন, শিক্ষক যখন প্রশিক্ষনে যায়, তখন সব দায় দায়িত্ব পিটিআইয়ের।
পঞ্চগড় পিটিআইয়ের সুপারিন্টেনডেন্ট যুথিকা রানী দাস বলেন, ওই শিক্ষক জেলহাজতে গেছেন- এমনটা জানা নেই। তবে চারমাস প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিতির কোন সুযোগ নেই। যেটা জানি ওই দুই শিক্ষক ভিতরগড় আনন্দময়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টার্নশিপ ডেপুটেশনে ছিল। চিঠিতে বিদ্যালয়ের নাম ভুল ছিল। পরে সংশোধন করা হয়নি বলেও জানান তিনি।
বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে