জালিয়াতি করে এনআইডি, আইনের জালে ভারতীয় নাগরিকসহ ৯ জন

সম্রাট হোসাইন, পঞ্চগড়
২৫ অগাস্ট ২০২৫


তথ্য গোপন জাল জালিয়াতি করে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণ করার অভিযোগে ভারতীয় দুই নাগরিকসহ জনের নামে মামলা করেছে পুলিশ। সোমবার (২৫ আগষ্ট) বোদা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রেজওয়ানুল হক মন্ডল বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

এদিকে ঘটনায় জড়িত নোয়াখালি এলাকার মিরাজ মোহাম্মদ তারেকুল হাসান নাসিরকে মামলায় আসামি না করার ক্ষোভ  বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। তারা বলছেন, মিরাজ ভারতীয়দের কাছে জমির দলিল সম্পাদন করে আদালতে মামলা করেন। আর সবচাইতে বেশী হয়রানি করছে তিনি। একটু কিছু হলেই পুলিশ পাঠিয়ে হয়রানি করতেন মিরাজ।

পুলিশের মামলার আসামীরা হচ্ছে- ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি থানার পশ্চিম মাগুরমারী গ্রামের মৃত জলধর রায়ের ছেলে ভবেন্দ্র নাথ রায় প্রধান (৭৫) ও বজেন্দ্র নাথ রায় প্রধান (৭১),দেবীগঞ্জ টেপ্রীগঞ্জ কাদেরের মোড় এলাকার মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে মোস্তফা কামাল (৪২), মারেয়া বামনহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু আনছার মো. রেজাউল করিম, ইউপি সদস্য মনছুর আলী, পরিষদের হিসাব সহকারি নুর ইসলাম, চৌকিদার দীনবন্ধু, বোদা উপজেলার মারেয়া নতুন বস্তি এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে জালাল হাজী(৫৫), বোদা বারপাটিয়া এলাকার মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে মজনু (৪০)

 

জানা গেছে, ভারতীয় নাগরিক জালিয়াতি করে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র করা সংক্রান্ত খবর একাধিক পত্রিকায় প্রকাশের পর দেবীগঞ্জের নাজমুল ইসলাম বাপ্পি সংবাদের কাটিংসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেন। তার পরিপেক্ষিতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্মারকে পুলিশ হেডকোয়াটার্স, ঢাকার স্পেশাল ব্রাঞ্চ বিষয়টি অনুসন্ধানপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বোদা থানায় পাঠানো হয়। পরে বোদা থানার অফিসার ইনচার্জ এ বিষয়ে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রেজওয়ানুল হক মন্ডলকে দায়িত্ব দেন।

 

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ভবেন্দ্র নাথ রায় প্রধান (৭৫) এবং বজেন্দ্র নাথ রায় প্রধান (৭১) এর পৈত্রিক বাড়ী ছিল পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ গাজকাটি খারিজা ভাজনি গ্রামে। তাদের পিতা জলধর রায় প্রধান এলাকার সম্পদশালী ব্যক্তি ছিলেন। স্বাধীনতার পূর্বে জলধর রায় টেপ্রীগঞ্জ এবং শালডান্সা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। জলধর রায়ের তিন ছেলে এবং এক মেয়ে। সম্পত্তির বিরোধে জলধর বায়কে হত্যা করলে তার তিন ছেলে ভারতে চলে যায়।

এদিকে জলধর রায়ের মেয়ে কুলবালা রায় ওরফে শ্রী নমিতা রানী রায় এর সাথে দেবীগঞ্জের সোনাহার ইউনিয়নের মৃত মনি ভূষণ রায় এর বিয়ে হয়। নমিতা রানী রায় মৃত্যুকালে এক ছেলে দুই মেয়ে রেখে যায়। তার একমাত্র পুত্র উত্তম কুমার রায় ওয়ারিশ সূত্রে জলধর রায়ের বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়। পরবর্তীতে সম্পত্তি বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট বিক্রি করে। হেলাল শেখ, মুসলিম উদ্দিনসহ ১৭ জনের কাছে মোস্তফা কামাল ২০২২ সালে জমি লিজ নিয়ে ফসল উৎপাদন করে।পরবর্তীতে মোস্তফা জানতে পারে জলধর রায়ের পুত্র ভবেন্দ্র নাথ রায় প্রধান ব্রজেন্দ্র নাথ রায় প্রধান এর পৈত্রিক সম্পত্তি। মোস্তফা কামাল তাদের সাথে যোগাযোগ করে জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া জমি বিক্রি করতে না পারায়। মোস্তফা তার মামাত ভাই জালাল হাজীর সঙ্গে মিলিত হয়ে মাড়েয়া ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারী নুর ইসলাম,পিয়ন মজনু, গ্রাম পুলিশ দীনবন্ধু মিলে জনৈক দুই ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরীর জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিসে কাগজ-পত্র দাখিল করলে জাতীয় পরিচয়পত্র হয়।

 

বোদা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মামলার বাদী মো.রেজওয়ানুল হক মন্ডল মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আরো অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা আছে,সে বিষয়টি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দেখবেন।

 

 

বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে



মন্তব্য
জেলার খবর