চাঁচকৈড় হাটে ডিঙি নৌকা পট্টিতে বাড়ছে ভীড়

সাজেদুর রহমান সাজ্জাদ, গুরুদাসপুর
২৫ জুলাই ২০২৫

কয়েক দিনের বর্ষণে নাটোরের গুরুদাসপুর দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই নন্দকুজা নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। পানি চলনবিলে প্রবেশ করায় প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে চলনবিলের নতুন নতুন এলাকা। এতে চলনবিলের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম  মাছ ধরার সহায়ক উপকরণ ডিঙি নৌকার চাহিদা, নৌকা তৈরি কেনাবেচায় ধুম পড়েছে।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে সরেজমিনে চলনবিলাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ নৌকার হাট নাটোরের গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় ঘুরে দেখা গেছে, বর্ষাকে ঘিরে নৌকা তৈরির কারিগররা ব্যস্তসময় পার করছেন। হাটের দক্ষিনাংশে ২৫-৩০টি কারখানায় চলছে ডিঙি নৌকা তৈরির কাজ। কারখানারগুলোর সামনে একটির পর একটি উঠিয়ে বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

সপ্তাহের দু’দিন- শনি মঙ্গলবারে হাটে বিক্রি হয় শত শত নৌকা। নৌকা কেনাবেচায় নিয়োজিত ব্যবসায়ী, মিস্ত্রি ক্রেতার হাকডাকে মুখরিত নৌকা পট্টি।

বর্ষা মৌসুমে কর্মহীন কৃষক জেলেদের মাছ ধরার সহায়ক উপকরণ নৌকা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক কাঠমিস্ত্রি। অন্যদিকে মহাজনরা আগে থেকে প্রয়োজনীয় কাঠ সংগ্রহ করে বর্ষাকে ঘিরে অপেক্ষায় থাকে নৌকা বিক্রির পসড়া সাজিয়ে।

পার্শ্ববর্তী সিংড়া উপজেলার বড় চৌগ্রামের রফিক, তাড়াশ উপজেলার কুন্দইল গ্রামের মাজদুল হোসেন,গুরুদাসপুরের পিপলা গ্রামের রাব্বী বলেন, তারা বিলপাড়ের কর্মজীবি মানুষ। বর্ষা মৌসুমে তাদের হাতে কাজ থাকে না। আবার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়ত করতে হয় নৌকায়। মাছ ধরে বাড়তি আয় পারাপারের জন্যই তারা ডিঙি নৌকা কিনতে এসেছেন। তাদের অভিযোগ গত বছরে তুলনায় এবার নৌকার দাম বেশি।

চাঁচকৈড় হাটের ডিঙি নৌকা তৈরির কারিগর পরিতোষ,রায়হান,আব্দুল মজিদ,ফজল,মাসুদ,ফজলু মোল্লা বলেন,বর্ষা মৌসুমে ডিঙ্গি নৌকার কদর থাকায় নৌকা তৈরী করে চলে তাদের সংসার। আকারভেদে প্রতিটি ডিঙি নৌকা তৈরী করে তারা পারিশ্রমিক পান ৮শ থেকে ১২শ টাকা। হাটে শিমুল,আম,মেহগিনি,ইউক্যালিপটাস কাঠের নৌকার কদর বেশি।

ব্যবসায়ী শিবলু ফকির জানান,শ্রাবণ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেও চলওে চলনবিলে আশানুরুপ পানি নাই। বলা যায় বর্ষা দেড়-দুইমাস পিছিয়ে শুরু হয়েছে। ডিঙি নৌকাও বিক্রি শুরু হয়েছে দেরিতে। পানি বাড়ার সাথে সাথে নৌকার চাহিদা বাড়ছে। ১০-১২ হাত নৌকা বিক্রি হচ্ছে হাজার ৫০০ থেকে হাজার টাকা। আর ১২-১৫ হাত নৌকা বিক্রি হচ্ছে হাজার ৫শ টাকা থেকে হাজার টাকা। এছাড়া নৌকার দু পাশে লোহার পাতের(প্লেনশীট)প্রতিটি নৌকা বিক্রি হচ্ছে থেকে হাজার টাকায়। প্রতিটি নৌকা ৫০০ টাকা লাভে তারা বিক্রি করছেন। গত বছরের তুলনায় শ্রমিক,কাঠ নৌকা তৈরীর প্লেনশীটের দাম বেশি। কারনে নৌকাও বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

হাটের ইজারাদার জাহাঙ্গীর আলম নিঠু বলেন,চাঁচকৈড় হাটের নৌকার সুনাম চলনবিলজুড়ে। প্রতি শনি মঙ্গলবার হাটবারে গড়ে থেকে ১২০টি নৌকা বিক্রি হয়। ছাড়া প্রতিদিন বাজারেও কমবেশি নৌকা বিক্রি হয়।

 

বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে

 



মন্তব্য
জেলার খবর