চাপ কমেছে ডলারের

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৫ জুলাই ২০২৫


দেশে একদিকে রেমিট্যান্স রপ্তানি আয় বেড়েছে। অন্যদিক কমেছে আমদানি ব্যয়। এর প্রভাবে বাজারে কমেছে ডলারের চাহিদা। আর এতে আগের চেয়ে কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে টাকার মান। বর্তমানে ডলারের দাম কমে ১২০ টাকার নিচে নেমে এসেছে। এ পরিস্থিতি সাময়িক স্বস্তির ইঙ্গিত দিলেও বাজারে নজরদারি নীতিগত স্থিতিশীলতা ধরে রাখা জরুরি বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, সোমবার (১৪ জুলাই)  ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২০ টাকা ১০ পয়সায় মার্কিন ডলার কেনাবেচা করেছে  ব্যাংকগুলো। এর আগে  গেল ২ জুলাই দর ছিল ১২২ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ৮৫ পয়সা। এরপর থেকেই ডলারের দর ধীরে ধীরে কমতে থাকে। ডলারের বর্তমান বাজার দর ১১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে গত আগস্টে সর্বনিম্ন দর নেমেছিল ১১৯ টাকা।

স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। সেই সঙ্গে  বেড়েছে রপ্তানি আয়ও। ফলে বাজারে ডলারের জোগান স্বাভাবিক রয়েছে। অন্যদিকে কাঁচামাল যন্ত্রপাতির মতো পণ্যের আমদানির খরচ তেমনটা না বাড়ায় ডলারের ওপর চাপ কমেছে। ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে।

এদিকে জুন মাসে আইএমএফ, এডিবি, জাইকা এবং এআইআইবি থেকে বড় অংকের ঋণ সহায়তা পেয়েছে বাংলাদশে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভেও ডলার বেড়েছে। এসব কারণে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের চলতি হিসাবে  কমেছে ঘাটত। ডলারের ওপর চাপ কমে যাওয়ার ডলারের দাম কমছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত ১৫ মে আইএমএফের সঙ্গে আলোচনার পর ডলারের বিনিময় দর নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন ডলারের দর ব্যাংক গ্রাহক নিজেরাই নির্ধারণ করছে।  যদিও অনেকে আশঙ্কা করেছিলেন- এ পদ্ধতিতে ডলারের দাম বেড়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে তার উল্টো, কমেছে দর।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে হাজার ৮৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। বিপরীতে ছয় হাজার ২৫ কোটি  ডলারের পন্য  আমদানি হয়েছে।  সে হিসাবে এক হাজার ৯৩৮ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল দুই হাজার ২২ কোটি ডলার। এটা দেশের অর্থনিতীর জন্য ভালো খবর, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন অনেকে।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত অর্থবছর শেষে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। এ অঙ্ক আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। প্রবাসী আয়ের ধারাবাহিক বৃদ্ধি  রীতিমতো স্বস্তি এনে দিয়েছে দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ডলারের জোগানে। গত অর্থবছর শেষে দেশের মোট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। রিজার্ভের এ মজুতের পরিমাণ গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

 

বিডি২৪অনলাইন/ইএন/এমকে

 



মন্তব্য
জেলার খবর