ইতিবাচক রেমিট্যান্স ও রিজার্ভ নিয়ে নতুন অর্থবছর শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
০২ জুলাই ২০২৫

 

বিদায়ী অর্থবছরে রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে রেকর্ড প্রবাহ এসেছে দেশে। সেইসঙ্গে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ফলে রেমিট্যান্স রিজার্ভের ইতিবাচক ধারা নিয়ে পহেলা জুলাই দেশে শুরু হয়েছে নতুন অর্থবছর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে দেশে আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। গত অর্থবছরে ৩০  রেমিট্যান্স এসেছে দশমিক ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর আগের অর্থবছরে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২৩ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

গত অর্থবছরে আসা মোট রেমিট্যান্স একক অর্থবছরে হিসেবে দেশে আসা সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। গত অর্থবছরে রেমিট্যান্সের ধারাবাহিক বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ডলারের জোগানে স্বস্তি এনে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগপৎ নীতিগত পদক্ষেপ নেওয়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রায় ধারাবারিহকভাবে বাড়ছে। রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে প্রণোদনাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় আগে অনেকেই  যেখানে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাতেন, এখন তারা ব্যাংক বা বৈধ চ্যানেল বেছে নিচ্ছেন। ফলে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে প্রবাসী আয় । আর এতে ডলারের চাপ যেমন কিছুটা কমেছে, তেমনই রিজার্ভও বেড়েছে।

এদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সহ আন্তর্জাতিক কয়েকটি  ঋণদাতা সংস্থার অর্থ প্রায় একসঙ্গে বেড়েছে পাওয়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে গত অর্থবছর শেষে দেশের রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে মোট  ৩১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। রিজার্ভের অঙ্ক গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আর আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় বিলিয়ন ডলার বেশি। এর আগে ২০২৩ সালে জুনে রিজার্ভ ছিল ৩১ বিলিয়ন ডলার, ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে রিজার্ভ ছিল মোট ২৬ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার।

 

গত অর্থবছর শেষে আইএমএফ হিসাব পদ্ধতি বিপিএম- অনুযায়ী দেশের রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার। এর আগের অর্থবছর এর পরিমাণ ছিল ২১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার।

এ দুই হিসাবের বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকৃত রিজার্ভ নামের আরেকটি হিসাব আছে। এ হিসাব শুধুমাত্র আইএমএফকে দেওয়া হলেও অন্য কোথাও প্রকাশ করা হয় না। কিন্তু আন্তর্জাতিক তিন ঋণদাতা সংস্থার অর্থ পাওয়ায় পর ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে এবার সেটাও প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্রের দপ্তর থেকে জানানো হয়, গত অর্থবছরের ২৯ জুন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই হাজার কোটি মার্কিন ডলার (২০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার) ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ রয়েছে। অর্থবছর শেষে আরও তিন কোটি ডলার বেড়েছে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ

রিজার্ভ থেকে প্রতি মাসে সাড়ে বিলিয়ন ডলার ব্যয় ধরে হিসাব করলে প্রায় চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। সাধারণত ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয় একটি দেশের। সেই হিসাবে রিজার্ভে এখন ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। একটি দেশের অর্থনীতির মানদন্ডের অন্যতম সূচক হচ্ছে রিজার্ভ।

এদিকে রিজার্ভ ও রেমিট্যান্সের এমন পরিস্থির মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রাক্কলন ধরেছে নতুন অর্থবছরে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ৩৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। মন্ত্রণালয়ের মিডিয়াম টার্ম ম্যাক্রোইকোনমিক পলিসি স্টেটমেন্ট অনুযায়ী, রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, আমদানিতে শতাংশ এবং রেমিট্যান্সে শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে আশা করা হচ্ছে নতুন অর্থবছরে।

 

বিডি২৪অনলাইন/ইএন/এমকে



মন্তব্য
জেলার খবর