গুরুদাসপুরে তোপের মুখে মাদ্রাসার ৬ পদের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
২২ এপ্রিল ২০২৪

নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসদরের খলিফাপাড়া রেজাউল করিম দাখিল মাদ্রাসার  সুপারসহ ছয়টি পদের নিয়োগ পরীক্ষা এলাকাবাসীর তোপের মুখে স্থগিত করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল ) পাশ্ববর্তী বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মেদপুর ডিগ্রি কলেজে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণকালে তোপের মুখে পড়েন নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা।

অভিযোগ, উৎকোচের বিনিময়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মনোনীত ব্যক্তিদের নিয়োগদানের চেষ্টা করেন পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. মোহাম্মদ আলী। এজন্য  নিয়োগ বোর্ড গঠনসহ নিয়োগের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় গোপনীয়তার সাথেই। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরেই তাতে বাধ সাধেন এলাকাবাসী।  ডা. মোহাম্মদ আলী গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক।

মাদরাসা সূত্র জানিয়েছে, বিধি মোতাবেক মাদ্রাসার ৬টি পদে নিয়োগদানের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় গত ২৯ ফেব্রুয়ারি। ওই বিজ্ঞপ্তিতে শূণ্য পদে সুপারিনটেনডেন্ট, সহকারি সুপার, এবতেদায়ি প্রধান, পরিচ্ছন্নকর্মী এবং সৃষ্ট পদে নিরাপত্তা কর্মী আয়া পদে দরখাস্ত আহবান করা হয়। এতে মোট ৪৯ জন প্রার্থী আবেদন করেন।

এদিকে সুপারিনটেনডেন্ট পদ নিয়ে গুরুদাসপুরের সহকারি জজ আদালতে মামলা করেন ওই প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারি তাছির উদ্দিন। ওই মামলায় আদালত সুপার পদে স্থিতি অবস্থা বজায় রাখতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন।

সূত্র বলছে, এসব পদে নিয়োগ দিতে ডিজি প্রতিনিধি হিসেবে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের (প্রশিক্ষণ উন্নয়ন) পরিচালক মো. জিয়াউল আহসান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আখতার, সদস্য সচিব হিসেবে ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুর রউফ, সভাপতি হিসেবে ডা. মোহাম্মদ আলী এবং অভিভাবক প্রতিনিধি হিসেবে দেলোয়ার হোসেনকে নিয়োগ বোর্ডের জন্য মনোনীত করা হয়। 

এসব পদে দরখাস্তকারীদের মধ্যে অনেককেই নিয়োগ পরীক্ষায় ডাকা হয়নি। এর মধ্যে মোহসিন আলী, উজ্জল ফকির, আব্দুল মজিদ, সাইফুল ইসলাম, জুয়েল রানাসহ অন্তত ২০ জন অভিযোগ করেন, তোপেরমুখে বাতিল হওয়া ওই নিয়োগ পরিক্ষায় তারা ডাক পাননি।

 

মামলার বাদি তাছির উদ্দিন বলেন, সুপার পদে নিয়োগদানের বিষয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তারপরও নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে চুপিসারে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, মাদরাসা পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধেও আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। ওই মামলাতেও কমিটির বিরুদ্ধে আদালত অন্তর্র্বতীকালীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।

মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের (প্রশিক্ষণ উন্নয়ন) পরিচালক মো. জিয়াউল আহসান বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞার কপি তিনি হাতে পাননি। তবে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন এবং দরখাস্তকারীদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র না দেওয়াসহ বিভিন্ন ত্রুটির কারণে তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করেছেন।

 

ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুর রউফ বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞার কথা তিনি জানতেন। তবে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে সভাপতির নির্দেশেই নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তারা।

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সেলিম আখতার বলেন, নিরাপত্তাজণিত কারণে পাশের উপজেলায় পরীক্ষার ভেন্যু নির্বাচন করা হয়েছিল। সেখানে তারা নিয়োগ দিতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন।

পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞার কপি তিনি বা তার প্রতিষ্ঠান পাননি। তবে নিয়ম মেনেই নিয়োগ পরিক্ষার প্রস্ততি নেওয়া হয়েছিলো। স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বাঁধার মুখে পরে সেটা স্থগিত করা হয়েছে।

 

বিডি২৪অনলাইন/সাজেদুর রহমান সাজ্জাদ/সি/এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর