ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে আবাদ নিয়ে শঙ্কিত বোরোচাষীরা

সাজেদুর রহমান সাজ্জাদ, গুরুদাসপুর(নাটোর)
০৫ এপ্রিল ২০২৪

 

দিন-রাত মিলে নিয়মিত -১০ বার লোডশেডিং হচ্ছে। ওই দিকে চৈত্রের তাপদাহে আবাদি জমির পানি দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় চলতি মৌসুমে বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নাটোরের গুরুদাসপুরের চাষীরা। তারা বলছেন, ঠিকমতো ও পর্যাপ্ত সেচ দিতে না পারলে ভালো ফলন হবে না। আর ভালো ফলন না হলে লোকসান গুনতে হবে তাদের। বিদ্যুৎ অফিস বলছে, চাহিদার বিপরীতে প্রাপ্তি কম। সে কারনে লোডশেডিং হচ্ছে। 

এদিকে সেচ মালিকরা বলছেন, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি লো-ভোল্টেজের কারণে বৈদ্যুতিক মোটরগুলো (সেচযন্ত্র) পুড়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকদের ভোগান্তির পাশাপাশি তাদের অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে। বাড়ছে উৎপাদন খরচ।

নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি- গুরুদাসপুর জোনাল অফিস সূত্রে জানা যায়, গুরুদাসপুরে ৬২ হাজার ১৯০ জন গ্রাহক রয়েছে বিদ্যুতের। এর মধ্যে বাণিজ্যিক গ্রাহক হাজার ৪৮৩ জন। সেচ কাজে ব্যবহৃত গভীর ও অগভীর মিলে রয়েছে হাজার ৩১১টি সেচ পাম্প। গুরুদাসপুরে ২৩ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও পাওয়া যাচ্ছে ১৬ মেগাওয়াট।

গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বছর উপজেলায় বোরোর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা হাজার ৯০০ হেক্টর। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েও বোরো আবাদ হবে বলে আশা করছেন তারা।

শুক্রবার ( এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে দেখা গেছে, মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে বোরো, ভুট্টা,তরমুজ,বাঙি,মিষ্টি কুমড়াসহ নানা জাতের সবজির আবাদ। এসব ফসল ও সবজি সবই সেচ নির্ভর।

পৌরসদরের আনন্দ নগর মাঠের কৃষক আবু সাঈদ জানান, দুই বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছি। ঘনঘন লোডশেডিং হচ্ছে। এ কারণে তাকেও সেচের জন্য বারবার জমিতে ছুটতে হচ্ছে। জমি শুকিয়ে না গেলেও পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছেন না তিনি। এভাবে লোডশেডিং চলতে থাকলে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় আছেন তিনি।

একই মহল্লার সেচ মালিক ইয়াছিন আলী জানান, রাত-দিন সেচ কাজ চালিয়েও কৃষকদের পানির চাহিদা পুরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে প্রায়ই তাদের সাথে কথা-কাটাকাটির মতো ঘটনা ঘটছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ জানান, তাপদাহে সময়মতো সেচ দিতে না পারলে ফসল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হতে পারে।

নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি- গুরুদাসপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মমিনুল ইসলাম জানান, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ প্রাপ্তি কম। রমজানে চাহিদা আরো বেড়েছে। এ কারনে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। এতে বোরো চাষে কিছুটা সমস্যা হতে পারে। কৃষকদের অফপিক আওয়ারে (রাত ১১ টা থেকে ভোর টা) সেচযন্ত্র চালানোর পরামর্শ দেন তিনি।

 

বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর