পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় সরকারি দুই কর্মচারী ঠিকাদারি কাজ করছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। নামসর্বস্ব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে কার্যাদেশ নিয়ে তারা এ কাজ করছেন বলে তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে।
অভিযুক্তরা হচ্ছেন- তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের কার্য সহকারি জহিরুল ইসলাম ও উপজেলা নির্বাহী অফিসের জারিকারক জিয়াউর রহমান। তারা বলছেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজের স্বার্থে সার্বক্ষণিক নির্ধারিত প্রকল্পস্থলে থাকায় কিছু মানুষ এমন প্রচারণা চালাচ্ছেন।
জানা যায়, অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন নির্মান প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২২ অর্থবছরে তেঁতুলিয়া উপজেলায় ৩৯টি ঘর নির্মাণে ৫টি প্যাকেজে দরপত্র আহবান করা হয়। এর মধ্যে ২ টি প্যাকেজের কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সত্বাধিকারী জেলার বোদার সিদ্দিকুর রহমান। বাকি ৩টির মধ্যে একটি করে পায় বোদার সুরমা ট্রেডার্স, রাদোয়া রুফাইদা ট্রেডার্স ও গোলাম ফারুক। প্রতি ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দ ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। সময় বাড়িয়ে নেওয়ায় এপ্রিল মাসের মধ্যে ঘর হস্তান্তরের কথা রয়েছে।
সরেজমিনে প্রকল্প এলাকায় গেলে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ, ইউসুফ আলী, আব্বাস আলী, তবিবর রহমান, সামশুল হক, আইনুল হক, ইউসুফ আলী, সহিদুলসহ অন্তত ১৫টি বাড়ির মুক্তিযোদ্ধা, তার পরিবারের সদস্য ও নির্মাণ কাজের মিস্ত্রিরা জানিয়েছেন- এ কাজ করছেন জহিরুল-জিয়াউর ঠিকাদার। আর কেউ আসেনি এখানে। তারাই আসেন কাজ দেখতে।
দেবনগর শান্তিজোত এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা সামশুল হক জানান, তেঁতুলিয়ার জহিরুল ঠিকাদার অফিসের কি-জানি চাকুরি করছে। আরেকজন আছে মজিবরের ছেলে জিয়া দু‘জনে ঠিকাদার। কাজ করছে হামিদুল মিস্ত্রি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাদোয়া রুফাইদা ট্রেডার্সের প্রোপাইটর আসাদুজ্জামান রাজিব জানান, অনেক দুর হচ্ছে। এ জন্য জহিরুলসহ আরেকজনের নাম জানি না, তাদেরকে দেওয়া হয়েছে কাজটি। বিল করার জন্য একদিন এসে স্বাক্ষর করে নিয়ে গেছে তারা।
ঠিকাদার সিদ্দিকুর রহমান জানান, একদিন স্বাক্ষর করে নিয়েছে। কাজগুলো জিয়া করছে।
অভিযোগের বিষয়ে জহিরুল ইসলাম বলেন, ঠিকাদারির সঙ্গে তিনি জড়িত নন। অফিসের নির্দেশে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ দেখাশোনার জন্য সাইটে যেতে হয়। জিয়াউর রহমান জানান, আমার শ্বশুর ঠিকাদার, তিনিই কাজ করেন। শ্রমিকের টাকা মাঝে মধ্যে আমার মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন।
তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, অফিসের লোকজন কাজ দেখাশোনার জন্য যাবে, এটাই স্বাভাবিক। এর বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.ফজলে রাব্বি মুঠোফোনে বার বার ফোন দিয়েও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিডি২৪অনলাইন/সম্রাট হোসাইন/সি/এমকে