দেশে ওষুধ শিল্পের মতো স্থানীয়ভাবে কীটনাশক উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য শুল্ক রেয়াত সুবিধা ও আমদানি সহজ করতে প্রয়োজনীয় কাঁচামালের তালিকা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে পাঠানো হবে। দেশীয়ভাবে কীটনাশক উৎপাদন হলে কৃষি খাতে একদিকে আমদানি নির্ভরতা কমবে, অন্যদিককে উৎপাদন বাড়বে। সেই সঙ্গে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি রপ্তানিতেও। সরকারের এমন উদ্যোগকে কৃষি ও এগ্রোকেমিক্যাল শিল্পের জন্য বড় মাইলফলক হিসেবে দেখছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে কীটনাশক উৎপাদন সংক্রান্ত তথ্য জানানো হয়েছে। এতে জানানো হয়, সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে ‘স্থানীয়ভাবে বালাইনাশক উৎপাদন ও রপ্তানির দ্বার উন্মোচন’ শীর্ষক এক সভা হয়। সে সভায় সিদ্ধান্ত হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বালাইনাশক শিল্পে একটি নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, উচ্চ শুল্কের কারণে দীর্ঘদিন ধরে দেশীয়ভাবে কীটনাশক উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছিল। এখন কাঁচামাল আমদানি সহজ ও শুল্ক রেয়াত সুবিধা পেলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবে স্থানীয় কোম্পানিগুলো। এতে সাশ্রয়ী দামে উন্নতমানের কীটনাশক পাবেন কৃষক।
জানা গেছে, বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকার কীটনাশক বাজার রয়েছে দেশে। এর মধ্যে প্রায় ৫৫ শতাংশ দখলে রয়েছে বহুজাতিক কোম্পানির। বাকিদের মধ্যে ৪১ শতাংশ আমদানিকারকদের হাতে এবং মাত্র ৪ শতাংশ রয়েছে দেশীয় উৎপাদনকারীদের হাতে। কীটনাশক উৎপাদনের কাঁচামালে শুল্কহার ৩০ থেকে ৫৮ শতাংশ পর্যন্ত থাকায় এমন দশা।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এনবিআর এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিলে আগামী ২–৩ বছরের মধ্যে কোনো বালাইনাশক আমদানি করতে হবে না। বরং দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। শুল্ক রেয়াত পেলে পণ্যের দাম অন্তত ৩০ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারবেন দেশীয় উৎপাদনকারীরা। এতে ভেজাল ও নিম্নমানের আমদানি হওয়া কীটনাশক থেকে রেহাই পাবেন কৃষকরা। স্থানীয় উদ্যোক্তাদের মতে, সরকারের এ সিদ্ধান্ত পুরো কৃষি খাতকে বদলে দেবে। সরকারের এ নীতিগত সহায়তা দেশীয় উৎপাদনে গতি আনার পাশাপাশি কৃষকের ব্যয় কমাবে।