আর কখনো স্বৈরশাসনের পথে বাংলাদেশ ফিরবে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, দলমত নির্বিশেষে গঠিত ঐকমত্যের ভিত্তিতেই টেকসইভাবে এগিয়ে যাবে দেশের গণতন্ত্র ও সংস্কার কার্যক্রম। জনগণের আত্মত্যাগে অর্জিত ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামো পুনর্গঠনের প্রক্রিয়াকে আর কোনো শক্তি বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি আরও বলেন, গত জুলাই মাসে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে ‘জুলাই ঘোষণা’র মাধ্যমে সংস্কার কার্যক্রমে সময়াবদ্ধ অঙ্গীকার করে। এ অঙ্গীকারের ফলে আগামী নির্বাচনে যে দলই জনগণের সমর্থন পাক না কেন, সংস্কার বাস্তবায়নে কোনো অনিশ্চয়তা থাকবে না। আর কখনো হুমকির মুখে পড়বে না বাংলাদেশের গণতন্ত্র।
সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের দাবিতে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্ম হয় বলে তার ভাষণে উল্লেখ করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, কিন্তু যে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আত্মত্যাগ করা হয়েছিল, সেটা গত পাঁচ দশকে বারবার বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। সেই অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য জনগণকে বারবার ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে।
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন চলতি বছর ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এর প্রথম বার্ষিকী পালিত হয়েছে, যেখানে তরুণসমাজ পরাভূত করেছিল স্বৈরাচারকে। সেই অভ্যুত্থান বৈষম্যমুক্ত ও ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের নতুন পথ খুলে দিয়েছে। সেই দায়িত্বই আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে জনগণ।
ড. ইউনূস বলেন, নির্বাহী আদেশে সংস্কার চালানো সম্ভব হলেও সরকার বেছে নিয়েছে কঠিন পথ—অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই প্রক্রিয়া। এজন্য বিচার বিভাগ, শাসনব্যবস্থা, নির্বাচন, জনপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা, দুর্নীতি দমন ও নারী অধিকারসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে ১১টি স্বাধীন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এ কমিশনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরির জন্য ৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল ও জোটকে নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে জাতিসংঘকে জানান প্রধান উপদেষ্টা। যোগ করে বলেন, পাশাপাশি স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে নাগরিকবান্ধব সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
বিডি২৪অনলাইন/এনএন/এমকে