সরকারি চাকুরে কেউ আইনসংগত কারণ ছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো আদেশ, পরিপত্র এবং নির্দেশ অমান্য করলে তার শাস্তি হবে নিম্নপদ বা নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ, বাধ্যতামূলক অবসর ও সর্বোচ্চ শাস্তি চাকরি থেকে বরখাস্ত। এছাড়া কোনো আদেশ বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্ত করলে বা এসব কাজে অন্য কোনো সরকারি কর্মচারীকে প্ররোচিত করলেও একই ধরণের শাস্তি হবে তার।
সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও দণ্ড সংক্রান্ত বিষয়ে এমন বিশেষ বিধান রেখে ‘সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। বুধবার (২৩ জুলাই) রাতে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশটি জারি করেছেন বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ।
নতুন অধ্যাদেশে সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও দণ্ড সংক্রান্ত বিশেষ বিধানে আরও বলা হয়েছে, ছুটি বা যুক্তিসংগত কোনো কারণ ছাড়া অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে সমবেতভাবে নিজ কর্মে অনুপস্থিত বা বিরত থাকলে বা যে কোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করলে সেটা সরকারি কর্মে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী অসদাচরণ হবে। আর এসব কর্মের জন্য কোনো সরকারি কর্মচারীকে নিম্নপদ বা নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ, বাধ্যতামূলক অবসর এবং চাকরি থেকে বরখাস্ত- এসব শাস্তি দেওয়া যাবে।
নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠলে অভিযোগ গঠন করে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশ দেওয়া হবে অভিযুক্তকে। অভিযুক্ত ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নিতে ইচ্ছুক কি না নোটিশে সেটাও জানতে চাওয়া হবে।
অভিযুক্ত নোটিশের জবাব দিলে বা জবাব না দিলেও তিন দিনের মধ্যে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বা অভিযোগ গঠনকারী ব্যক্তি। তদন্ত কমিটির সদস্যদের এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির থেকে কর্মে জ্যেষ্ঠ হতে হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তি নারী হলে তদন্ত কমিটিতে আবশ্যিকভাবে একজন নারী সদস্যকে রাখতে হবে। তদন্তের আদেশ পাওয়ার পরবর্তী ১৪ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে কমিটিকে।
যুক্তিসংগত কারণে এ সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে না পারলে সর্বোচ্চ একবারের জন্য ৭ কার্যদিবস সময় বাড়ানো যাবে। তদন্ত কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে না পারলে নতুন তদন্ত কমিটি গঠন হবে। সেই তদন্ত কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে না পারলে অদক্ষতা হিসেবে বিবেচনা করা হবে তাদের। এটা সরকারি কর্মচারী বাতায়ন ও ডোসিয়ারে লিপিবদ্ধসহ সংরক্ষিত থাকবে। এছাড়া চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
দণ্ডের বিষয়টি জানিয়ে অভিযুক্তকে তদন্ত প্রতিবেদনের কপি দেওয়া হবে। দণ্ড আরোপের ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে আপিল করার সুযোগ পারবেন অভিযুক্ত। আপিল কর্তৃপক্ষ চাইলে দণ্ড বহাল বা বাতিল করতে পারবেন। তবে রাষ্ট্রপতির আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিল করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মচারী দণ্ডাদেশ পাওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে কেবলমাত্র আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে পারবেন।
বিডি২৪অনলাইন/এনএন/এমকে