আষাঢ়ে সারা দেশে টানা কয়েকদিন বৃষ্টি হলেও উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের মানুষ এখনো বৃষ্টির দেখা পায়নি। বৃষ্টি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে এ জেলার কৃষক। তীব্র গরম আর বৃষ্টির অভাবে চাষাবাদ থেকে শুরু করে জনজীবনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বর্ষার ভরা মৌসুমেও হাল চাষ করতে পারছে না চাষীরা। এ জেলার মানুষের প্রত্যাশা এখন এক মিলিমিটার বৃষ্টির।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, যেসব জমিতে পানি ছিল, কিছু নিচু এলাকায় ও সেচ এবং শ্যালো মেশিনের পানি দিয়ে ধান রোপণ শুরু করেছেন কৃষক। বেশির ভাগ এলাকায় বৃষ্টি না হওয়ায় সেসব জমিগুলো এখন ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। খাঁ খাঁ করছে মাঠের পর মাঠ। দিনের প্রখর রোদে মাটি শুকিয়ে ফেটে গেছে।
চার মাইল এলাকার কৃষক নুর ইসলাম জানান, খরায় মাঠ পুড়ে চৌচির হয়ে গেছে। এখনো জমিতে হাল দেওয়া যায়নি। বৃষ্টি হলে এতো দিন জমি তৈরি করা হতো। সময়মতো রোপা আমনের চারা রোপণ করা সম্ভব হতো।
ফুটকিবাড়ি এলাকার আব্দুস সাত্তার বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে আমন চাষের আবাদ নিয়ে দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। পানির অভাবে জমিগুলোতে হালচাষ করা সম্ভব হয়নি। আমন ধানের আবাদের জন্য জমি হাল চাষ করে কমপক্ষে ১৫ দিন ফেলে রাখতে হয়। কিন্তু বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। এদিকে বীজও উপযোগী হয়েছে।
লুৎফর রহমান বলেন, আষাঢ় মাসে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা, সে পরিমান বৃষ্টিপাত হয়নি। ফলে আমাদের আমন ধানের জমিগুলো হাল চাষ করা হয়নি। ইতোমধ্যে বীজতলাগুলো রোপনের উপযোগী হয়ে উঠেছে। ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমনের জমিগুলো শুকনো পড়ে আছে। যদি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি না হয়, তাহলে শ্যালো মেশিন ও সেচের পানি দিয়ে জমিতে চাষাবাদ করতে হবে। তবে সেক্ষেত্রে আমাদের উৎপাদন খরচ অনেকটা বেড়ে যাবে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় জানান, কয়েক দিন থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। কিন্তু বৃষ্টি নেই। তবে আগামী ২৪ ঘন্টায় এ অঞ্চলে হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আসাদুন্নবী বলেন, প্রচণ্ড খরার কারণে কৃষক জমিতে হালচাষ দিতে পারছেন না। এ বছর আমন ধান রোপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৩ হাজার ৯৫৫ হেক্টর জমি। ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সেচ ও কিছু কিছু দোলায় পানি থাকায় ২৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষাবাদ শুরু হয়েছে। এখনো আমন ধানের চাষাবাদের যথেষ্ট সময় আছে। বৃষ্টিপাত শুরু হলেই রোপা আমন চাষাবাদ ব্যাপক পরিমাণে শুরু হবে।
বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে