‘ব্রেইন ডেড’নারীর গর্ভে বেড়ে ওঠা সন্তান দেখলো পৃথিবীর মুখ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১০ জুলাই ২০২৫


সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মা বা শিশুর মৃত্যুর খবর মাঝেমধ্যেই পাওয়া যায়। কিন্তু ব্রেইন ডেড নারীর গর্ভে ভ্রুনের বেড়ে ওঠা, সেই গর্ভ থেকে জীবিতভাবে সন্তান  ভূমিষ্ঠ হওয়ার খবর এর আগে কখনো শোনা যায়নি। অবিশ্বাস্য মনে হলেও  নজির এ ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে। খবর বিবিসি

খবরে বলা হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রচণ্ড মাথাব্যথা নিয়ে হাসপাতালে যান অ্যাড্রিয়ানা স্মিথ নামের এক এক অন্তঃসত্ত্বা নারী। সেখান থেকে চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থাপত্র ও ওষুধ দেওয়া হয়। বাড়ি ফেরার পরদিন সকালে তাঁর ঘুম ভাঙে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে। এরপর আবার নেওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষায় ধরা পড়ে মস্তিষ্কে রক্তজমাট বেঁধেছে অ্যাড্রিয়ানার। তখন বাঁচানো সম্ভব হয়নি তাঁকে। ঘোষণা করা হয় তিনিব্রেইন ডেড’ । কিন্তু অ্যাড্রিয়ানার সন্তান তখনো বেঁচে ছিল তাঁর গর্ভে।

এদিকে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, গর্ভের সন্তানের হৃৎস্পন্দন থাকলে ইচ্ছাকৃতভাবে কারও জীবন থামিয়ে দেওয়া বেআইনি। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যাড্রিয়ানার পরিবারের অনুমতির তোয়াক্কা না করেই সিদ্ধান্ত নেয়- সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগ পর্যন্ত অ্যাড্রিয়ানাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হবে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার এমোরি ইউনিভার্সিটি হসপিটালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় তাকে।

লাইফ সাপোর্টে মূলত একজন ব্যক্তিকে কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রাখা হয়। যন্ত্রপাতির মাধ্যমে শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখা থেকে শুরু করে দেহে রক্তসঞ্চালন- সব কিছু ঠিক রাখা হয়। ব্রেইন ডেড অ্যাড্রিয়ানার শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চালু রাখা হয়েছিল সেই সব যন্ত্রপাতির মাধ্যমে। আর প্রযুক্তির কল্যাণেই পেটের ভেতরে বেঁচে থাকার রসদ পাচ্ছিল তার গর্ভের সন্তান। এভাবে ফেব্রুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত কেটে যায় সময়।

জুন মাসে সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে পৃথিবীর আলো দেখে অ্যাড্রিয়ানার  গর্ভের সন্তানের। জন্মের সময় তার ওজন ছিল দুই পাউন্ডেরও কম। জন্মের পর নবজাতককে রাখতে হয়েছে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে। তার জন্মের কয়েক দিন পর ৩১ বছর বয়সী অ্যাড্রিয়ানার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়, মারা যান তিনি। পৃথিবীর বুকে এভাবে জন্ম নেওয়ার এমন সুযোগ ভবিষ্যৎ কতটা প্রয়োগ হবে,   সে প্রশ্ন থেকে যায় এখন।



মন্তব্য
জেলার খবর