রাজশাহী বাঘায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের এক ঘণ্টার সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষকালে কয়েকটি হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পুলিশ অর্ধশত রাউন্ড টিয়ার সেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচী কেন্দ্র করে শনিবার (২২ জুন) সকাল ১১টার দিকে বাঘা উপজেলা পরিষদের সামনে সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
আহতদের মধ্যে বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাছ আলী, বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবলু, আড়ানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শফিউর রহমান শফি রয়েছেন। এদের মধ্যে আশরাফুল ইসলাম বাবলুসহ দুইজনকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি আহতদের বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার বেলা ১১টার দিকে বাঘা পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আক্কাছ আলীর অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির প্রতিবাদে মানববন্ধনের ডাক দেয় স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমের সমর্থক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকে এ মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন সদ্য উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী রোকনুজ্জামান রিন্টু ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবলু। উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
অপরদিকে, সচেতন নাগরিকবৃন্দের ব্যানারে বাঘা সাব রেজিস্টার অফিসের দলিক লেখক সমিতির নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেয় উপজেলা চেয়ারম্যান লায়েভ উদ্দিন লাভলু সমর্থিত স্থানীয় আওয়ামী লীগের আরেক গ্রুপ। মেয়র আক্কাছ আলীর নেতৃত্বে পৌরসভার সামনে থেকে এ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি মানববন্ধনটি অতিক্রমের সময় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এদিকে সংঘর্ষ নিয়ে পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ করেছেন উভয়পক্ষ। উপজেলা চেয়ারম্যান লাভলু গ্রুপের সমর্থকদের দাবি, মানববন্ধন থেকে তাদের বিক্ষোভ মিছিলে হামলা করা হয়েছে। আর এমপি শাহরিয়ার গ্রুপের সমর্থকরা বলছেন, মিছিল নিয়ে এসে তাদের মানববন্ধনে হামলা করা হয়েছে।
রোকনুজ্জামান রিন্টু জানান, পৌরসভার মেয়র আক্কাছ আলীর নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে এসে তাদের শান্তিপুর্ন মানববন্ধনে হামলা চালানো হয়েছে। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবলুসহ তাদের পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে বাবলুসহ দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আক্কাছ আলী জানান, তাদের শান্তিপুর্ন মিছিলে মানববন্ধন থেকে হামলা করা হয়েছে। এতে তিনি নিজেসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতরা বাঘা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
বাঘা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, দুটি কর্মসূচিতে পাল্টা-পাল্টি বক্তব্য ও শ্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ার সেল ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি২৪অনলাইন/সৌমেন মন্ডল/সি/এমকে