নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় খলিফাপাড়ার বাসিন্দা মাফিজুল ইসলামের লাশ (২৮) টয়লেটের মেঝে থেকে তুলে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। ১ বছর ১০ মাস আগে তাকে হত্যা করে লাশ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে সেখানে পুতে রাখা হয়েছিল।
আদালতের নির্দেশে রোববার(৩ মার্চ) দুপুরে লাশটি উত্তোলন করা হয়। অভিযোগ তার পরকীয়া প্রেমিকা তানজিলা, তার স্বামী ও আরেক প্রেমিক এবং তানজিলার বাবা মিলে তাকে হত্যা করে।
মাফিজুল ইসলাম গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় খলিফা পাড়া মহল্লার আজাদ প্রামানিকের ছেলে। তিনি পেশায় রঙ মিস্ত্রি ছিলেন।
এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের দেওয়া তথ্য জায়গা থেকেই মাফিজুলের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এলাকাবাসী বলছে, লাশ উত্তোলনের সময় তিন আসামিকে ঘটনাস্থলে আনা হয়। এর চার ঘন্টার প্রচেষ্টায় টাইল্স এবং ঢালাই কাটার পর প্রায় দশ ফুট মাটি খুঁড়ে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
লাশ উদ্ধারের সময় ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে গুরুদাসপুরের সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাকিল, নাটোরের অর্থ ও প্রশাসন বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাইনুল ইসলাম, ক্রাইম এন্ড অবস বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরিফুল ইসলাম, ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী বিভাগের সহকারি পরিচালক খুরশেদ আলম, সহকারি পুলিশ সুপার (সিংড়া-গুরুদাসপুর সার্কেল) আখতারুজ্জামান, চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান ও গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) উজ্জল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান জানান, মাটি খুঁড়ে এক ব্যক্তির দেহবাশেষ পাওয়া গেছে। মাংস পচে হাঁড় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার ৮জন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা তিনজনকে অভিযুক্ত করে গুরুদাসপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন মাফিজুলের মা মাইনুর বেগম। আসামিরা- তানজিলা, তার বাবা চাঁচকৈড় বালিকা দাখিল মাদরাসার নৈশ্য প্রহরী তাহের খলিফা, তার স্বামী আল-হাবিব ও আশরাফুল।
গ্রেফতার নামীয় চার আসামি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। অধিকতর তদন্তের জন্য তাদের তিনদিনের পুলিশি রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, তানজিলার সঙ্গে মাফিজুলের পরকীয়া প্রেম নিয়ে তানজিলার সংসারে বিরোধ চলছিলো। এ কারণে ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে তানজিলার মাধ্যমে মাফিজুলকে বাড়িতে ডেকে নেন তাহের খলিফা। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন আল-হাবিব ও আশরাফুল ইসলাম। ওই বাড়িতে চারজন মিলে মাফিজুলকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এদিকে সন্তানের সন্ধান না পাওয়ায় ২০২২ সালের ৭ মে গুরুদাসপুর থানায় একটি ডায়েরী করেন মাফিজুলের মা।
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাইনুল ইসলাম (অর্থ ও প্রশাসন ) বলেন, তানজিলা স্বামীর অগোচরে মাফিজুলসহ একাধিক ব্যক্তির সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিষয়টি জানাজানি হলে তার সংসারে কলহ দেখা দিলে মাফিজুলকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয় আসামিরা।
বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে