রাজশাহীতে পাট কাটায় ব্যস্ত কৃষক- ছবি মানিক হোসেন
চলতি বছরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম, পুরোপুরি বর্ষা এখনো হয়নি। ফলে পাট জাগ দেওয়া এবং পাটের আশানুরূপ ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষীরা। গত বছরে দাম ভালো পাওয়ায় এবার জেলায় গতবছরের তুলনায় ৪৪২ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ বেশি হয়েছে।।
বাগমারার পাটচাষি রেজাউল করিম বলেন, এখন পাট কাটা শুরু হয়েছে। কিন্তু বিলে পানি নেই। পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে রোদে শুকিয়ে যাচ্ছে৷
১ বিঘা জমিতে নিজে পাটের আবাদ করেছেন উল্লেখ করে এ চাষী বলেন, অপেক্ষায় আছি বৃষ্টির। বৃষ্টি হলে বিলে পানি জমবে। পাট জাগ দেব তখন। জানি না কেমন হবে পাটের ফলন ও পাটের দাম।
কৃষক রেজাউল করিম বলেন, গত বছর ৪ বিঘার বেশি জমিতে পাটের চাষ করেছিলাম। পাট বিক্রি করে ভালো দামও পেয়েছি। তাই এ বছরও পাট চাষ করেছি। পাটের আবাদ ভালোও হয়েছে।
মোহনপুর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছরই পাট চাষ করি। পাট কাটবো, কিন্তু জলের ব্যবস্থা না থাকায় দেরি করছি।
পাট ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জানান, পাটের দাম গত কয়েক বছর থেকে ভালো পাচ্ছেন চাষীরা। রাজশাহীতে সরকারি পাটকল বন্ধ থাকলেও বেসরকারি বেশ কয়েকটি পাটকল প্রতিনিধিরা পাট কিনে থাকেন।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানায়, গতবছর জেলায় পাট চাষ হয়েছে ১৯ হাজার ১৫৮ হেক্টর জমিতে। এ বছর চাষ হয়েছে ১৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে জেলার মতিহার এলাকায় ১০ হেক্টর, বোয়ালিয়া এলাকায় ১ হেক্টর, পবায় ২ হাজার ২৬৫ হেক্টর, মোহনপুরে ৯০ হেক্টর, বাগমারায় ১ হাজার ৭১০ হেক্টর, দুর্গাপুরে ১ হাজার ৭১৪ হেক্টর, পুঠিয়ায় ৪ হাজার ৪৬০ হেক্টর, গোদাগাড়ীতে ৮৯০ হেক্টর, চারঘাটে ৩ হাজার ৩৯৫ হেক্টর ও বাঘায় ৫ হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে এখনও সেইভাবে পাট কাটা শুরু হয়নি। সম্প্রতি বৃষ্টির কারণে পাট গাছ বেড়েছে। তবে খাল বিলে পাট জাগ দেওয়ার মতো পানি নেই । বৃষ্টিপাত হওয়া সাপেক্ষ আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে পুরোদমে পাট কাটা শুরু হবে।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক আবদুস সালাম বলেন, এ বছর রাজশাহীতে তুলনামূলক বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। আশানুরূপ বৃষ্টি হয়নি। বর্ষার সময় এখনও আছে। আশা করা হচ্ছে বৃষ্টি হবে।
বিডি/সি/এমকে