তরুণ তরুণীদের কোনো ভয়ডর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

এ দেশের কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীদের মনে কোনো ভয়ডর নেই।  তাই তারা জাতীয় নির্বাচনের আগের দুমাসের প্রতিটি মুহূর্তকে উৎসবমুখর করে রাখবে। সব রকমের হিংসা, কোন্দল থেকে বাঁচিয়ে রাখবে দেশকে। দেশ ছেড়ে  যারা পালিয়েছে, তারা বুঝে গেছে তরুণ যোদ্ধারা তাদের পুনরুত্থানের পক্ষে ভীষণ রকম বাধা। অস্ত্রহীন, ভীতিহীন, ব্যক্তিগত স্বার্থ সম্বন্ধে সম্পূর্ণ উদাসীন দৈনন্দিন চেহারার ছেলে-মেয়েদের নিয়ে তাদের সাংঘাতিক ভীতি। তাদের লক্ষ্য নির্বাচন আসার আগেই পথের বাধাগুলো সরিয়ে ফেলা। নিজেদের রাজত্ব আবার কায়েম করা। যতদিন তাদের সঙ্গে তাদের বন্ধুরা আছে, ততদিন স্বপ্ন দেখবে তারা। নির্বাচন হয়ে গেলে সমর্থন জোগাতে তাদের বন্ধুরা বেকায়দায় পড়বে। তাই তারা চায় নির্বাচনের আগেই তাদের ফিরে আসা নিশ্চিত করতে। নানা ভঙ্গিতে তারা করবে এটা। কঠিনতর পরিকল্পনা নিয়ে প্রস্তুতি আছে তাদের।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর . মুহাম্মদ ইউনূস।  প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, তরুণদের রক্ষা করুন। তাহলে আমরা সবাই এবং আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি রক্ষা পাবে। তিনি জানান, উৎসবমুখর শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করে সবাই মিলে আমরা দেশের ওপর আমাদের পরিপূর্ণ দখল প্রতিষ্ঠিত করবো। নির্বাচনের বাকি মাত্র দুমাস। আমরা তাদের ওপর নজর রাখবো এবং বাকি দিনের প্রতিটি দিন উৎসবমুখর করে রাখবো। এখানে পুরোনো আমলের দাসত্ব মেনে যারা আছে, তাদের দাসত্ব থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে আরও বলেন- দায়িত্ব গ্রহণের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে তিনটি বিষয়কে। জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার, একটি জবাবদিহিমূলক কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণের জন্য রাষ্ট্রকাঠামোর প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্দেশে সংগঠিত হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে ট্রাইব্যুনাল একটি মামলার রায় দিয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্বাধীন স্বচ্ছ, প্রমাণভিত্তিক বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের ছাত্র, শ্রমিক সাধারণ জনগণের ওপর নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের প্রধান নির্দেশদাতা হিসেবে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধান শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে পলাতক শেখ হাসিনা এবং সাজাপ্রাপ্ত অপর আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে দেশে ফেরানোর জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে সরকার।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কিছু প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোগত সংস্কার সম্পন্ন করা হয়েছে।  সংশোধন করা হয়েছে কয়েক ডজন পুরোনো আইন। সেই সঙ্গে বেশ কয়েকটি নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। সংস্কারের সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। মৌলিক সাংবিধানিক সংস্কার নিশ্চিত করতে এটি আদেশ আকারে জারি হয়েছে। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে এখন নাগরিকদের অনুমোদন নেওয়ার পালা। তাই আগামী নির্বাচনে আপনাদের সিদ্ধান্ত অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ। গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের পথরেখা এখান থেকেই সূচিত হবে। আগামী নির্বাচনের সময় একইসঙ্গে জুলাই জাতীয় সনদের ওপর গণভোট হবে। গণভোটে আপনারা হ্যাঁ/না ভোটের মাধ্যমে সংস্কারের পক্ষে বা বিপক্ষে মতামত দিন।

 

বিডি২৪অনলাইন/এনএন/এমকে

 



মন্তব্য
জেলার খবর