গেল আগস্ট মাসে ছড়ানো গুজব ও ভুয়া তথ্য সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)। প্রতিষ্ঠানটির হিসাবে এ মাসে ৩৪০টি ভুয়া তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে। এ মাসে অধিকাংশ ভুয়া তথ্য ছিল রাজনীতি বিষয়ক। সবচেয়ে বেশি শিকার হয়েছেন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রধান প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার হয়েছে সামাজিক মাধ্যম।

মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সেটা সংশোধন করতে দীর্ঘ সময় লেগে যায় বলে মনে করেন সিজিএস’র প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান। তার মতে, সংশোধনে দীর্ঘ সময় লাগলেও ক্ষতি হয় মুহূর্তের মধ্যে। গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হচ্ছে ভুয়া তথ্য। কেননা জনগণের মতামতকে বিকৃত করে এটা। ভুয়া তথ্য সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে জাতীয় পাঠ্যক্রমের সঙ্গেও বিষয়টি সংযুক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন সিজিএস’র প্রেসিডেন্ট।

সিজিএস বলছে, আগস্ট মাসে বিষয়ভিত্তিক ভুয়া তথ্যের ঘটনার মধ্যে ২৬৮টি গুজব ও ভুয়া তথ্যই ছিল রাজনীতি বিষয়ক। এর বাইরে ধর্মীয় ও বিনোদন-সংক্রান্ত ভুয়া তথ্য ছড়ায় ১৬টি, অনলাইন হোক্স ১৩টি, কূটনৈতিক বিষয়ে ১১টি, পরিবেশ-সংক্রান্ত ৯টি, অর্থনৈতিক ৫টি ও সাম্প্রদায়িক বিষয়ে ২টি।

সিজিএস’র পরিসংখ্যান বলছে, গত জুন ও জুলাই মাসে যথাক্রমে ৩২৪ ও ২৯৬টি ভুয়া তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে। এ দুই মাসের সংখ্যা আগস্টের তুলনায় অনেক কম। তবে এ দুই মাসের মতো গত আগস্টেও রাজনৈতিক বিষয়ে ভুয়া তথ্যের আধিক্য লক্ষ্য করা গেছে। রাজনীতি বিষয়ক ভূয়া তথ্য জুন মাসে ছিল ৭৮ শতাংশ, ২৫৩টি; জুলাই মাসে ছিল ৭৪ শতাংশ, ২২০টি এবং আগস্ট মাসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮.৮ শতাংশ, ২৬৮টি।

আগস্ট মাসে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ঘিরে ৯৬টি ভুয়া তথ্য শনাক্ত হয়েছে। যা ছড়ানো মোট ভুয়া তথ্যের ২৮.২৪ শতাংশ। রাজনৈতিক দলকে ঘিরে ৮৩টি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ৪৮টি, সেলিব্রিটি ১৭টি, অন্তর্র্বতীকালীন সরকার ও ধর্ম ১৬টি, সরকারি প্রতিষ্ঠান ৯টি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়ে ৮টি ভুয়া তথ্য ছড়ানো হয় এ মাসে। এ ছাড়া, অনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু ছিল ৪৭টি।

আগস্ট মাসের ছড়ানো ৩৪০টি ভুয়া তথ্যের মধ্যে ৩৩১টি শনাক্ত হয়েছে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, থ্রেডস এবং এক্স (টুইটার)-এর মতো প্ল্যাটফর্ম থেকে। এটা মোট ছড়ানো ভূযা তথ্যের ৯৭.৩৫ শতাংশ। কেবল ৯টি ভুয়া তথ্য শনাক্ত হয়েছে অনলাইন নিউজ পোর্টালে।