নির্মাণের একমাস পার না হতেই রাস্তায় ধ্বস, জনমনে ক্ষোভ

সাজেদুর রহমান সাজ্জাদ, গুরুদাসপুর
১৮ জুলাই ২০২৫

নাটোরের গুরুদাসপুরে হেরিংবন্ড রাস্তা নির্মাণের একমাস পার না হতেই অনেকস্থান ধ্বসে গেছে। দুই ধাপে এডিপি এলজিএসপি প্রকল্পের আওতায় ২৭৯ মিটার রাস্তা নির্মাণে বরাদ্দ ছিল ১৩ লাখ ১২ হাজার টাকা। সদ্য নির্মিত রাস্তার বিভিন্ন অংশে ধ্বসে যাওয়ায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়দের ভাষ্য-  রাস্তাটি নির্মাণের নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে, তাছাড়া বিধি অনুসরণ না করায় এমন পরিণতি হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের চিৎলাপাড়া গ্রামীণ সড়কটি হেরিংবন্ড করা হয়েছে সম্প্রতি। দ্বিতীয় ধাপের কাজ শেষ হয়েছে গত জুন মাসে। এডিপি প্রকল্পের অধীন লাখ টাকা বরাদ্দে ১০৭ মিটার হেরিংবন্ড রাস্তা নির্মাণ করা হয় এ মাসে। নাটোরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আরিফ কন্সট্রাকশন নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেন। একই রাস্তার বাকি ১৭২ মিটার এলজিএসপি প্রকল্পের আওতায় নির্মান করা হয়। এতে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা ছিল লাখ ১২ হাজার টাকা। এটা বাস্তবায়ন করেন স্থানীয় গোকুল এন্টারপ্রাইজ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, যথাযথভাবে ইট ব্যবহার না করে ইটের ওপর বালির আস্তরণ বিছিয়ে রাস্তা নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে। ইটের নিচে মাঝে বালি দেওয়া হয়নি। রাস্তার পাশে মাটি কম দেওয়ায় বিভিন্নস্থান দেবে ধ্বসে গেছে। হাঁটাচলার সময় ইটগুলো নরবড় করছে। রাস্তার পাশের এজিংও বিভিন্নস্থানে ধ্বসে গেছে।

স্থানীয় নুর আমিন, মুন্নাফ, সিদ্দিক মোল্লাসহ অন্তত ১০জন জানান, দীর্ঘদিন পর মেঠো রাস্তাটি পাকা হয়েছে। নির্মাণ কাজে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। এলাকাবাসী বাধা দিলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেটা অগ্রায্য করে নির্মান কাজ শেষ করেছে। নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ট্রলির ভাড়েই দেবে গেছে রাস্তাটি। বালু দিয়ে ইটগুলো ঠিকভাবে বসানো হয়নি। ফলে ভারি যানচলাচল দুরে কথা পায়ে হাটলেই ইটগুলো নড়াচড়া করছে। অনেক জায়গায় রাস্তা দেবে গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

মূলত ধারাবারিষা ইউপি সদস্য মো. কামরুজ্জামান ওই রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের কাগজে কলমে সভাপতি হলেও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ধারাবারিষা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন নিজের প্রায় সব কাজকর্ম করিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, রাস্তাটি নির্মাণে নিম্নমানের ইট-বালু ব্যবহার করা হয়নি। তার তত্ত্বাবধানে কাজও হয়নি। নির্মাণ কমিটি কাজ দেখভাল করেছে।

ঠিকাদার কামরুজ্জামান বলেন, রাস্তা নির্মাণ কাজ বিধি অনুসরণ করেই শেষ করা হয়েছে। একটু ঊনিশ-বিশ হতে পারে। রাস্তা ভেঙে বা দেবে গিয়ে থাকলে তা মেরামত করে দেওয়া হবে।

গুরুদাসপুর উপজেলা প্রকৌশলী মিলন মিয়া জানান, এলজিএসপি প্রকল্পের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য নেই। তবে এডিপি প্রকল্পে অনিয়ম হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে

 



মন্তব্য
জেলার খবর