গেল এপ্রিল মাসে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৩ জন নিহত এবং ১ হাজার ২০২ জন আহত হয়েছে। এর বাইরে এ মাসে রেলপথে দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত ও ৫ জন আহত এবং নৌপথে ৮টি দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও একজন নিখোঁজ রয়েছে। এ পরিসংখ্যান দিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সংগঠনটি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ দুর্ঘটনার খবরের ভিত্তিতে এ পরিসংখ্যান তৈরি করেছে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির রাখা হিসাবে, এপ্রিল মাসে সারা দেশে মোট ৫৬৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। আর রেলপথে ৩৫টি দুর্ঘটনা, নৌপথে ৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
তথ্য অনুযায়ী সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৬১০টি দুর্ঘটনায় ঘটেছে। এতে ৬২৮ জন নিহত ও ১২০৭ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে মোটরসাইকে। ২১৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২২৯ জন নিহত এবং ২২৪ জন আহত হয়েছেন এ মাসে।
বিভাগগুলোর মধ্যে এপ্রিল মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রাম বিভাগে। সেখানে ১৩৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩৬ জন নিহত ও ৩৭৭ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সিলেট বিভাগে হয়েছে, সেখানে ২৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত ও ৫১ জন আহত হয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণের মধ্যে রয়েছে- সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশার অবাধ চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ যাতায়াতকারী ব্যক্তিগত যানের চালকদের রাতে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালানো; জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টার্নিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হওয়া; মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন; অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালকের অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানো।
দুর্ঘটনা প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান; ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন যথাযথভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা; উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসবিহীন যানবাহন স্ক্র্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়ার কথাও বলছে সংগঠনটি।
বিডি২৪অনলাইন/এনএন/এমকে