পঞ্চগড়ে পাইপ লাইন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ইন্ডিয়া বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। মাত্র এক লাখ ২০ হাজার টাকার টিনসেট ঘরের মূল্য ২৬ লাখ ৮২ হাজার ৬৫৬ টাকা এবং চার দশমিক ৩৬ শতক জমির মূল্য এক লাখ ৩৫ হাজার ৮৩ টাকা দেখা হয়েছে। এভাবে সর্বসাকুল্যে ২৮ লাখ ১৭ হাজার ৭৩৯ টাকায় অধিগ্রহণ করা হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারীর যোগসাজশে সরকারি টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করে উত্তোলনকৃত অবকাঠামোর টাকা ফিরত নিয়ে মুল মালিককে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা।

তথ্যনুযায়ী, এ প্রকল্পের আওতায় তেঁতুলিয়া উপজেলার কাটাপাড়া মৌজায় ২০২০-২১ সালে ৯১৫ দাগে দশমিক ৩৬ শতাংশ জমি অধিগ্রহন করা হয়। অধিগ্রহণকৃত জমির মালিক দাবীদার নাওয়াপাড়ার তরিকুল ইসলাম, নুরল হক জফিরুল হক গং। কালদাস পাড়া এলাকার মৃত শরিফ উদ্দিনের ছেলে নুর ইসলাম ওই জমির মালিক সেজে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কাগজপত্র জমা দেন। জমি অধিগ্রহনের টাকা না দিলেও অফিসের যোগসাজশে নুর ইসলামকে জমিতে অবকাঠামো বাবদ ২৬ লাখ ৮২ হাজার ৬৫৬ টাকার চেক প্রদান করা হয়। যদিও এখন পর্যন্ত মামলা জটিলতায় আটকে আছে জমি অধিগ্রহনের টাকা।

জমি বাড়িটির দাবীদার তরিকুল ইসলাম জানায়, ২০১৫ সালে বছরের জন্য ২৬ শতক জমির মাঝে টিনের চৌচালা ঘর নুর ইসলামকে ভাড়া দেওয়া হয়।জেলা প্রশাসক জমি অধিগ্রহন করলে নিজের দাবী করে গোপনে নুর ইসলাম স্থানীয় রাজু চেয়ারম্যানের মাধ্যমে অবকাঠামো বাবদ ২৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা উত্তোলন করে। তবে জমির টাকা দেয়নি।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের তথ্যনুযায়ী, তেঁতুলিয়ার কাটাপাড়া মৌজায় ৯১৫ দাগে .৩৬ জমি অধিগ্রহন করা হয়। সেখানে সেমি পাঁকা দুটি ঘর ৩৪/১৩ ৪২/১৫ ফুট এবং ৪২/ ২৮/ ফুট বারান্দা,টয়লেট,টিউবওয়েলের ফ্লোর দেখানো হয়েছে।যদিও স্থানীয় আব্দুল হামিদ,উমের আলী,নুরল হক,জফিরুল হকসহ একাধিক ব্যাক্তি জানান,জমি অধিগ্রহনের আগে টিনের ঘর,বাঁশের বেড়া ফ্লোর পাকা ছিল।পরে টাকা পেয়ে সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

নুর ইসলাম বলেন, আমি জমি নিয়েছি ভাইদের কাছে। আমার বিপক্ষরা নিয়েছে বোনদের কাছে। দখলে ছিল তাদের। পরে সেটা লেখালেখি হয়। অবকাঠামোর দাম ভারতের লোক সরাসরি দিয়েছে। ডিসি অফিসের লোক ছিল না। ডিসি রমজান স্যার একদিন আসে দেখে গেছে। আমার সাথে জহিরুল স্যারের ভাল সম্পর্ক ছিল।তারপরও অনেকবার ঘুরে টাকা পেয়েছি।

গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান সরকার বলেন, অধিগ্রহণের বিষয়টি আমি যোগদান করার আগের। তবে জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে কি কি স্থাপনা আছে, সে বিষয়ে চিঠি দিবে। পরে অফিসের উপ-সহকারী সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দিবেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল কাদের বলেন, বিষয়টি অনেক আগের।তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

 

বিডি২৪অনলাইন/সম্রাট হোসাইন/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর