মায়ের কিডনি নিয়েও মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন মেধাবী জাহিদ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
০৭ এপ্রিল ২০২৪

বাবাকে হারানার পর সংগ্রামের মধ্য দিয়েই চলছিল জাহিদ হাসানের জীবন।  তারপরও মেধাবী তার চোখে ছিল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন। এ জন্য বাংলায় স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ ডাক্তারি একটি রিপোর্ট তার জীবনে নিয়ে আসে কালো মেঘ! রঙিন স্বপনের জায়গায় বেঁচে থাকাটাই হয়ে যায় তার আশা।

রিপোর্টে জাহিদ হাসানের দুটি কিডনিই বিকল ধরা পড়ে। এরপর তার মা তাকে একটি কিডনি দিয়ে বুকের ধনকে যমের হাত থেকে রক্ষা করে। কিন্তু সমস্যা এখন  সেই কিডনি নিয়মিত চেকআপ আর পথ্যের খরচ নিয়ে।

প্রতি তিনমাস অন্তর প্রতিস্থাপিত কিডনি চেকআপের কথা বলে দেন চিকিৎসক।  কিন্তু গত মাস ধরে অর্থাভাবে সেটা আর করতে পারেনি জাহিদের পরিবার। বিভিন্ন মাধ্যমে হাত পেতেও চাহিদার অর্থ জোগাতে ব্যর্থ হয় তারা।  এখন দ্রুত চেকআপ এবং তদনুযায়ী চিকিৎসা না পেলে প্রতিস্থাপিত কিডনি বিকলের শঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

২৭ বয়সের জাহিদ হাসানের বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার ঠেকরপাড়া গ্রামে। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন তিনি।  ২০২২ সালের ২২ জানুয়ারি ঢাকার শ্যামলীতে সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালে মায়ের দেওয়া কিডনি জাহিদের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়।

জাহিদ হাসান বলেন, বছর বয়স থেকেই পিতৃহীন আমি জীবনের প্রতিটি পদে পদে সংগ্রাম করে যাচ্ছি। সংগ্রাম করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করতে না করতেই শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি অঙ্গ ড্যামেজ হয়ে যায়। সাথে জীবনের সব আশা ভরসা শেষ হয়ে যায়।

তিনি জানান, হাজার চেষ্টা করে নিজের মায়ের একটি কিডনি নিয়ে কোনো রকম বেঁচে আছি। কিন্তু এই বেঁচে থাকায় জীবনের সংগ্রাম খুবই প্রবলতর হচ্ছে আমার কাছে দিন দিন। নিয়মিত ওষুধ আর চিকিৎসার অভাবে মায়ের দান করা অঙ্গটিও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দিনদিন। ফলে এগিয়ে যাচ্ছি মৃত্যুর দিকে।

জাহিদ হাসানের বোন নূরনাহার বলেন, অনেকের সহযোগিতায় সে যাত্রায় আমার ভাই বেঁচে ফিরেছে। সব মিলিয়ে সে সময় লাখ টাকা খরচ হয়। জন্য ৩০ শতাংশ জমিসহ পৈতৃক ভিটাটুকুও বিক্রি করতে হয়েছে। কিন্তু এবার দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। চিকিৎসাভার বহন করতে আর পারছি না। জরুরি চেকআপে পাঠানো দরকার, অর্থাভাবে পারছি না। ডাক্তারের কথা অনুযায়ী, বেশিদিন চেকআপ অনিয়মিত হয়ে গেলে মায়ের দেয়া কিডনি রিজেকশন হবার আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কিডনি প্রতিস্থাপনের পর থেকেই জাহিদের প্রতিমাসে প্রায় ১৫ হাজার টাকার মেডিসিন লাগে। প্রতি তিনমাস অন্তর চেকআপে খরচ হয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। এবার দীর্ঘসময় বিরতি পড়ায় সব পরীক্ষা একসঙ্গে করতে হবে, এজন্য ব্যয় অনেকটা বেড়ে যাবে।

মেধাবী জাহিদ হাসানের এ অবস্থায় মানবিক মানুষ হিসেবে আপনিও তার পাশে দাঁড়াতে পারেন। আপনার ক্ষুদ্র সহায়তায় ভরসা পাবেন তিনি। তাকে সহযোগিতা করতে  চাইলে জাহিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন তার ০১৭৫১০০০৯৯৮ নম্বরে। এ নম্বরে বিকাশ/নগদ/রকেট অ্যাকাউন্ট খোলা আছে।

 

বিডি২৪অনলাইন/সম্রাট হোসাইন/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর