অবৈধ দখল ও দূষণের কবলে ধুঁকছে দেশের বেশিরভাগ নদ-নদী। এতে চরম হুমকির মুখে পরিবেশের ভারসাম্য। দখলের পেছনে প্রভাবশালীদের হাত রয়েছে। এ হাতের পাশাপাশি নানা জটিলতায় এসব নদ-নদীকে দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না। কোনোভাবেই ঠেকিয়ে রাখা যাচ্ছে না নদী দখলকারীদের।
প্রভাবশালীদের হাত থাকার বিষয়টি জানিয়েছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী। জাতীয় নদী দিবসের এক সেমিনারে বিষয়টি জানান তিনি। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানী ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে এ সেমিনার হয়।
সেমিনারে ওঠে আসা তথ্যানুযায়ী, দেশে প্রতিদিন ৮ থেকে ১২টি নদীর ওপর হায়েনার মতো হামলা চালানো হচ্ছে। দূষণ, দখল, বালু তোলার মাধ্যমে এ হামলা হচ্ছে। অথচ কমিশন নিঃসঙ্গ সেরপার মতো কাজ করছে। কেননা তাদের আশেপাশে কেউ নেই। তাই হামলা থেকে নদীকে বাঁচাতে পারছে না তারা।
উদাহরণ টেনে ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, পদ্মা নদীতে তৎপর তিনটি সন্ত্রাসী গ্রুপের দৌরাত্ম্যে নদীর অবৈধ খনন ঠেকানো যাচ্ছে না। কর্ণফুলীর মতো অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নদীকে লিজের নামে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। চাঁদপুরের মেঘনাকে দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না এক নারী মন্ত্রীর কারণে।
দেশের নদ-নদীর অভিভাবক হিসেবে কমিশন চেয়ারম্যান অসহায়ত্ব প্রকাশ বলেন, বছরে মাত্র ৫ কোটির কম টাকায় চলে নদী কমিশন। নানা সময় সরকারের কাছে নানা কিছু চেয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। বিশজন ম্যাজিস্ট্রেট চেয়েও পাওয়া যায়নি। অথচ এ কমিশনকে বলা হয় নখদন্তহীন। মূলত হা-পা কেটে ফেলা হয়েছে আমাদের ।
ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী জানান, নদীরক্ষায় কাজ করতে গিয়ে নদী কমিশন ও প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা হয়রানির শিকার হচ্ছে। তার ওপর কমিশনের দক্ষ কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়। এমনকি পদোন্নতি না দিয়ে নির্জীব করে দেওয়া হয়। ফলে কিছুই করতে পারছে না কমিশন।
এদিকে ঢাকার চারপাশের নদীর সীমানা নিজেরা নির্ধারণ করলেও দূষণ রোধে ব্যর্থ পরিবেশ অধিদফতর। ফলে নদীপাড়ের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বিডি/এন/এমকে