চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশই ঢাকার বাইরে গ্রাম ও মফস্বল এলাকায়। কয়েক বছরের ব্যবধানে দেশের গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গুর বিস্তার বেড়েছে পাঁচগুণ। এদিকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে নগরে বিভিন্ন পরিকল্পনা-পদক্ষেপ থাকলেও প্রতিরোধের ব্যাপারে গ্রামে তেমনটা পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়। ফলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিনের সঙ্গে বেড়েই চলেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, সেবার ক্ষেত্রে ২০২১ সালে ডেঙ্গু রোগীর ৮৩.০৭ শতাংশই ছিল রাজধানীতে। সেখান থেকে এক বছরের ব্যবধানে কমে ২০২২ সালে ঢাকার রোগী দাঁড়ায় ৬২.৮৭ শতাংশ। এ বছরে ঢাকার বাইরে রোগী বেড়ে দাঁড়ায় ৩৭.১৩ শতাংশ। ২০২৩ সালে গ্রামের রোগীর সংখ্যা ঢাকাকে ছাড়িয়ে যায়- ঢাকায় ছিল ৩৩.৮৫ শতাংশ, ঢাকার বাইরে ছিল ৬৬.১৫ শতাংশ। গতবছরে সেখান থেকে বেড়ে ঢাকায় হয় ৩৯.৩০ শতাংশ। তবে কিছুটা কমে ঢাকার বাইরে দাঁড়ায় ৬০.৭০ শতাংশ। চলতি বছরে গত ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১০ হাজার ২৯৬ জন। এর মধ্যে ঢাকার বাইরে আছে ৮ হাজার ৬২ জন। আর ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় শনাক্ত হন দুই হাজার ২৩০ জন। শতাংশের হিসাবে ঢাকার বাইরে ৭৮.৩ শতাংশ আর দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ২১.৭ শতাংশ।
এমন পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গ্রামের বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা নেওয়া না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) সূত্র মতে, এডিস ইজিপ্টি ও অ্যালবোপিকটাস মশার মাধ্যমে ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু। ইজিপ্টি শহরে পাওয়া গেলেও অ্যালবোপিকটাস থাকে গ্রামাঞ্চলে, বন-জঙ্গল, বাঁশের ঝাড়, গাছের বাকলের মতো স্থানে। এ মশা আগে ডেঙ্গু ভাইরাস বহন না করলেও এখন করছে। আরও ওদিকে ইজিপ্টি মশাও কোনো না কোনোভাবে গ্রামাঞ্চলে ঢুকে গেছে। এখন এ দুই প্রজাতির মশাই সমান তালে ডেঙ্গু ভাইরাস বহন করছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সঠিক রোগী ও তার অবস্থান শনাক্ত করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করাটা অতি জরুরি। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটা না করায় অন্য কোনো অঞ্চল থেকে আক্রান্ত হলেও রোগী যেখানে চিকিৎসাধীন, সেখানেই মারা যাচ্ছেন। আর তালিকা করা হচ্ছে সেই জায়গার ভিত্তিতে। এতে আক্রান্ত মশাকে আড়াল করে বংশবিস্তারের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে ।
বিডি২৪অনলাইন/এনএন/এমকে