২২ দিন পর উৎফুল্লতা ও কর্মচাঞ্চল্য ফিরছে জেলেদের মাঝে

২৮ অক্টোবর ২০২২

কামরুজ্জামান শাহীন,ভোলা:

একটানা ২২ দিন পর ভোলার জেলেদের মাঝে উৎফুল্লতা ও কর্মচাঞ্চল্য ফিরছে। কারণ শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) মধ্যরাতের পর থেকেই তারা  আবারো মেঘনা, তেতুঁলিয়া নদীতে ইলিশ ধরতে পারবেন। উৎপাদন বাড়াতে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম  ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুত, ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করে সরকার।

জানা গেছে, ফের ইলিশ শিকার ঘিরে ইতোমধ্যে জাল বুনন, ট্রলার মেরামত ও পুরাতন জাল রিপুসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন জেলেরা। ইলিশের মৌসুম শেষের দিকে হলেও গত কয়েক বছর শীতের সময় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় জেলেদের আগ্রহ বেড়েছে এবার।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভোলা সদরের ইলিশা ফেরিঘাট, নাছিরমাঝি, তুলাতুলি, ভোলারখাল, ইলিশা বিশ্বরোড, ঢালচর, বকসি, সামরাজসহ মেঘনাপাড়ের বেশকিছু এলাকায় জেলেদের ব্যস্ততা বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। নদীর কুল ঘেষে বাঁধের উপর রাখা হয়েছে সারি সারি নৌকা ও ইঞ্জিন চালিত ট্রলার। নদীতে নামার অপেক্ষায় রয়েছে জেলেরা।  জেলে পরিবারগুলো স্বপ্ন দেখছে, ইলিশের প্রাচুর্যতায় তাদের অভাব দূর হবে। ফিরে আসবে পরিবারে স্বচ্ছলতা।

জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম বলেন,  বর্তমানে জেলেদের নৌকা-ট্রলার-জালসহ অনান্য সরাঞ্জম ইলিশ শিকারের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। আশা করছেন সামনের দিনগুলোতে ব্যাপক ইলিশ মাছ পাবেন জেলেরা।

ইলিশা এলাকার জেলে ইসমাইল ও আব্দুল ওহাব বলেন, টানা ২২ দিন নদীতে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ধার-দেনা করে দিন পার করেছি। মধ্যরাত থেকে পুনরায় মাছ শিকার শুরু হবে। তাই নৌকা, জালসহ অনান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত করে রেখেছি। রাত ১২ টা বাজার অপেক্ষা এখন। মাছ শিকারে যাওয়ার জন্য নৌকা শেষ মুহূর্তের মেরামত নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছিলেন জেলে আকবর, হাসান ও ইদ্রিস। তারা বলেন, এ বছর ভরা মৌসুমে তেমন ইলিশ ধরা পড়েনি। যখন ইলিশ পাওয়া শুরু হলো, তার কিছুদিন পরই সরকারিভাবে ইলিশ শিকাওে উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তাই আশা করছি নিষেধাজ্ঞার পর ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে। ইজাজ মাঝি এলাকার জেলে কুদ্দুস মাঝি ও হারুন মাঝি জানান, নদীতে দীর্ঘদিন ইলিশ শিকার হয়নি। তাই প্রথম দিকে ব্যাপক ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশা তাদের।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাতউল্লাহ বলেন, ২৮ অক্টোবর রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। আশা করছি এ বছর নির্বিঘ্নে মা ইলিশ তাদের ডিম ছাড়তে সক্ষম হয়েছে। সরকারের ব্যাপক প্রচার প্রচারণা ও কঠোর অভিযানের ফলে ৯৫ ভাগ জেলেই ইলিশ শিকার থেকে বিরত ছিলো। তারপরেও অসাধু কিছু জেলে আইন ভঙ্গ করেছে- এমন ৮৬ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও ১৫০ জেলেকে মোট ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অবৈধ জাল উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ৮ লাখ মিটার।

এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর