প্রতিবেশি দেশসহ বিশ্ববাজারের তুলনায় কম দামে দেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ডিজেল। চলর্তি অর্থবছরের শুরু (জুন) থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডিজেলের লিটারে ভর্তুকি দিতে হয়েছে ২.৯৭ টাকা থেকে শুরু করে ১৩.০১ টাকা। এতে জ্বালানি বিপণনকারী সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে (বিপিসি) গত সাড়ে পাঁচ মাসে লোকসান গুনতে হয়েছে প্রায় ১১৪৭.৬০ কোটি টাকা। তাছাড়া দেশের বাজারে তুলনায় তেলের দাম কথা থাকায় প্রতিবেশি দেশে ডিজেল পাচার করছে চোরাকারবারিরা। বিদেশে জ্বালানি পাচার রোধকল্পে মূলত এ মূল্য বৃদ্ধি। ডিজেল সংক্রান্ত এ তথ্য ওঠে এসেছে ফেসবুকে দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তাঁর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের এক স্ট্যাটাসে। শনিবার ফেসবুকে তাঁর ভ্যারিফাইড পেজে ‘ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি ও কিছু তথ্য: গুজব থেকে দূরে থাকুন- সত্য তথ্য জানুন’ শিরোনামে এ স্ট্যাটাস দেন।
মঙ্গলবার রাতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়ানো হয়। এরপরই ফুঁসে ওঠেছে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। দাম প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি ও বক্তব্য দিচ্ছে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও। বলছে, এর প্রভাবে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে সাধারণ মানুষের। বর্ধিত দাম প্রত্যাহার অথবা ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য শুক্রবার ভোর থেকে সড়কে গণপরিবহন (বাস-ট্রাক) চলাচল বন্ধ রেখেছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। আর এ দাম বৃদ্ধিতে লঞ্চের যাত্রী ভাড়া শতভাগ বাড়ানোর দাবিতে ‘ধর্মঘটে’ যাচ্ছে লঞ্চ মালিকরাও। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা, বিশেষত গত্যন্তর না থাকাদের। সিএনজি চালিত অটোরিকশা-টেম্পুসহ তিন চাকার স্থানীয় যানবাহনে যেতে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাদের। অন্যদিকে সাধারণ যাত্রীদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ‘ ধর্মঘট’ প্রত্যাহারের জন্য পরিবহন সংগঠনের নেতাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
স্ট্যাটাসটিতে সজীব ওয়াজেদ জয় জানান, কোনো অবকাশ না থাকলেও সম্প্রতি দেশে ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা চলছে। দাম বৃদ্ধির বিষয়টি পরিস্কার করতে তিনি প্রতিবেশি দেশে ডিজেলের বাজার পরিস্থিতি তুলে ধরেন স্ট্যাটাসে। জানান, ভারতে মূল্য কমার পরও ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি পশ্চিমবঙ্গে ৯০ রুপি (১০৪ টাকা) ও দিল্লিতে ৯৮.৪২ রুপি (১১৪ টাকা)। নেপালের ক্ষেত্রে এ দর ১১২.৩৯ নেপালি রুপি (৮১ টাকা)।
স্ট্যাটাসটির তথ্যানুযায়ী, দেশে লিটারপ্রতি ডিজেলের মূল্য ২০১৩ সালে ছিল ৬৮ টাকা। ২০১৬ সালে ৩ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ৬৫ টাকা। এরপর গত সাড়ে পাঁচ বছরে আর ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধি হয়নি দেশে। ফলে ডিজেলের ক্ষেত্রে ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হয় বিপিসি।
এমকে