প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৬ লাখ কোটির বেশি টাকা

০৪ জুন ২০২১

রাষ্ট্র পরিচালনায় আগামী অর্থবছরের (২০২১-২২) প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদের উত্থানপন করা হয়েছে।এ বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। এর মধ্যে  ঘাটতি রয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। জীবন ও জীবিকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, কর্মসংস্থান, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কৃষি খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এ বাজেটে।

বৃহস্পতিবার বিকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল নিজেই এ বাজেট উত্থাপন করেন। এর আগে সংসদে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে এ বাজেটের অনুমোদন দেয়া হয়। অনুমোদিত এ বাজেট সংসদে উপস্থাপনের অনুমতি দেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ। 

এ বাজেট  জিডিপির ১৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ, ঘাটতি জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ। চলতি  অর্থবছরের (২০২০-২১) মূল বাজেটের তুলনায় প্রস্তাবিত বাজেট ৩৫ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা বেশি।  

বাজেট অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।বুধবার বিকালে একাদশ সংসদের ক্রয়োদশ এ অধিবেশন করোনার স্বাস্থ্য বিধি মেনে শুরু হয়, পরের দিন বাজেট উত্থাপন করা হলো। প্রস্তাবিত এ বাজেটের ওপর আলোচনান্তে এ মাসের শেষ দিকে বসা সংসদ বৈঠকে পাশ হবে এ বাজেট।

এ বাজেটকে ‘মানুষের জন্য বাজেট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন অর্থমন্ত্রী। এ বাজেট অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের তৃতীয় আর বাংলাদেশের জন্য  ৫০তম বাজেট। বর্তমান সরকারের টানা ১৩তম বাজেট।

এ বাজেট ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক উৎস থেকে ১ লাখ ১ হাজার ২২৮ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা ও  ব্যাংক ঋণ ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা।  অনুদানসহ ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ১১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা (জিডিপির ৬ দশমিক ১ শতাংশ)।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের  কাজের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী সামগ্রিক ব্যয় কাঠামো (উন্নয়ন ও পরিচালন ব্যয়) সামাজিক অবকাঠামো, ভৌত অবকাঠামো ও সাধারণ সেবা খাত মিলে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে এ বাজেট। সামাজিক অবকাঠামো খাতে ১ লাখ ৭০ হাজার ৫১০ কোটি টাকা ও মানবসম্পদ খাতে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১ লাখ ৭ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা; কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ৭৪ হাজার ১০২ কোটি টাকা এবং যোগাযোগ ও অবকাঠামো খাতে ৬৯ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা,বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা, করোনা মোকাবেলায় ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ; স্বাস্থ্যখাতে ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতের গবেষণায় ১০০ কোটি টাকা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় ২৬ হাজার ৩১১ কোটি টাকা; মাধমিক ও উচ্চ শিক্ষায় ৩৬ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষায় ৯ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ৪১ হাজার ১০ কোটি টাকা, কৃষিখাতে ২৪ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা,মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জন্য ৪ হাজার ১৯১ কোটি টাকা; তৈরি পোশাক খাতে ১ শতাংশ হারে রপ্তানি প্রণোদনা অব্যাহত রাখা, পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে  বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ খাতে আগের অর্থবছরের চেয়ে বাড়িয়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২ শতাংশ ও মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ ধরা হয়েছে । রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা।

এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর