বালুর ওভারলোডে পকেট ভারী ষ্টেশন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের

সম্রাট হোসাইন, পঞ্চগড়
২০ অগাস্ট ২০২৫

পঞ্চগড়ে মালবাহী ট্রেনে ওভারলোড দিয়ে বালু পরিবহণ করা হচ্ছে। এ সুবিধা দেওয়ায় বাড়তি টাকা উঠছে ষ্টেশন কর্মকর্তা কর্মচারীদের পকেটে।  এতে একদিকে মোটা অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, অন্যদিকে ওভারলোডের কারণে ঝুঁকিতে পড়েছে রেললাইনসহ মালবাহী ট্রেনগুলো। ওভারলোডের কথা স্বীকার করে নিলেও অর্থ নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, সম্প্রতি পঞ্চগড় রেল ষ্টেশন থেকে মালবাহী ট্রেনে করে বালু পরিবহন শুরু হয়েছে। এতে রেলের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা দেখা গেলেও ষ্টেশন সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারীর অনিয়মের কারণে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

তথ্যনুযায়ী, ঢাকনা ওয়ালা এবং ঢাকনা বিহীন খোলা দুটি মালবাহী ট্রেনের ৩০টি ওয়াগনে (বগি) বালু পরিবহন করা হয়। এসব ওয়াগনের ধারণ ক্ষমতা ৫৫ মেট্রিক টন। ভেজা বালু ২৮ ইঞ্চি এবং শুকনো বালু ৩৫ ইঞ্চি উচ্চতায় চিহ্ণিত দাগে প্রত্যেকটি ওয়াগনে বালু লোড দেয় শ্রমিকরা। ধারণ ক্ষমতা ৫৫ মেট্রিক টন হলেও ট্রেন চলাচলের সময় ঝাঁকি খেয়ে পরিমাপের স্কেলে বালুর পরিমাণ কমে যায়। এ জন্য ব্যবসায়ীরা কয়েক ইঞ্চি ওভার লোড করে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে আন্তঃদেশীয় বালু আমদানীকারক কয়েকজন রেল কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রত্যেক বগিতে অতিরিক্ত ৩০ থেকে ৩৫ মেট্রিক টন বালু পরিবহন করছে।

ব্যবসায়ী শ্রমিকরা বলছে, মালবাহী ট্রেন ব্যবস্থাপনার জন্য ট্রেন প্রতি মোটা অংকের ঘুষ দিতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের। তারা জানায়, ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার বালু ১০ চাকার ট্রাকে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পরিবহন করতে খরচ হয় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। তবে রেলপথে একই পরিমাণ বালু পরিবহনে খরচ হয় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। এতে পরিবহন খরচ ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কমে যায়। কিন্তু ট্রেনে প্রতি ওয়াগনে (বগি) -১০ হাজার টাকা অতিরিক্ত দিতে হয় সংশ্লিষ্ট কর্তাদের।

ব্যবসায়ী রবি হাসান জানান, ওভার লোডে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি স্পষ্ট। েএটা সবাই জানে। রেলে বালু পরিবহনের ব্যবসা শুরু হওয়ায় ষ্টেশনে সবার মধ্যে উৎসাহ শুরু হয়েছে। কিন্তু এভাবে দুর্নীতি শুরু হলে এক সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে বালু পরিবহন। তখন আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। আমরা চাই স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হোক।

পঞ্চগড় রেল ষ্টেশনের ভারপ্রাপ্ত ষ্টেশন মাস্টার জাহেদুল ইসলাম জাহিদ ঘুষ আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, মালবাহী ট্রেনে অতিরিক্ত বালু লোড করা হয় না। ট্রেন চলাচলের সময় ঝাঁকি খেয়ে পরিমাপের স্কেলে বালুর পরিমাণ কমে যাওয়ায় এক-দুই ইঞ্চি বালু বেশি নেয় ব্যবসায়ীরা।

 

 

বিডি২৪অনলাইন/সি/এমকে



মন্তব্য
জেলার খবর