শীতে ফ্লু, রাইনোর মতো অন্যান্য মৌসুমি ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যায়। ঠান্ডা-জ্বর ভেবে অনেকেই হাসপাতালে যাচ্ছে না, পরীক্ষাও করছেন না। অথচ জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা, মাথাব্যথা উপসর্গগুলো করোনার লক্ষণ। ইতোমধ্যে করোনার সংক্রমণ বাড়তেও শুরু করেছে। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে সংক্রমণ কয়েক গুণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে ফাইজার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কার্যক্রমের ১ম, ২য় এবং বুস্টার ডোজ (৩য়, ৪র্থ ডোজ) প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এর কার্যক্রম শুরুও হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গত ডিসেম্বরে করোনায় সংক্রমণের হার চার গুণের বেশি বেড়েছে। মারাত্মক না হলেও নতুন উপধরন জেএন.১ এর সংক্রমণের হার বেশি। নতুন ধরন নিয়ে আতঙ্ক হওয়া কিছু না থাকলেও প্রয়োজন রয়েছে সচেতনতার। ষাটোর্ধ্ব ও কোমরবিডি রোগাক্রান্তদের জন্য হুমকি হতে পারে এটা। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে মাক্স পরা জরুরি এমনটাই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে, দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ২০ লাখ ৪৬ হাজার ৯৬৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। করোনা আক্রান্ত ২৯ হাজার ৪৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৪ হাজার ৩৩৯ জন। শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৯।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) নতুন ধরনকে কড়া নজরে রেখেছে। এটাকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ বা ‘আগ্রহের বৈকল্পিক’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করেছে সংস্থাটি। আগের ধরনগুলোর মতোই জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা, মাথাব্যথা, স্বাদ বা গন্ধ হারানো ও ক্লান্তি ইত্যাদি জেএন.১-এর সাধারণ লক্ষণ। গুরুতর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে- শ্বাসকষ্ট, বুকব্যথা, ডায়রিয়া ও বিভ্রান্ত বোধ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সারাবিশ্বে করোনা সংক্রমণের প্রায় অর্ধেকেই নতুন এ ধরনের দ্বারা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট তথ্যমতে, নতুন এ ধরনের বিরুদ্ধে করোনা টিকা কার্যকর। যাদের বয়স ৬০ এর বেশি, কোমরবিডিটি আছে তাদের মাক্স পরা জরুরি। যারা এখনো চতুর্থ ডোজের টিকা নেননি, তাদের দ্রুত টিকা নেওয়া উচিত। ইতোমধ্যে আড়াই কোটি ডোজ টিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। ২০২৪ ও ২০২৫ সালে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে চতুর্থ ডোজ হিসেবে এ টিকা দেওয়া হবে।
ওদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতাল, ফুলবাড়িয়া সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে টিকা দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তী ধাপে ঢাকার বিভিন্ন বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট ও সরকারি হাসপাতাল, ঢাকার বাইরের সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে কোডিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে জানা গেছে।
বিডি২৪অনলাইন/এন/এমকে