ব্যাটিং ব্যর্থতায় টাইগারদের হার

০৪ জুলাই ২০২২

ব্যাটিং ব্যর্থতার বৃত্তে আরো একটি হার দেখল বাংলাদেশ। রোববার রাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩৫ রানে হেরেছে মামুদুল্লাহ বাহিনী। জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৯৪ রান। জয়ের জন্য ব্যাট করতে নেমে ১৫৮ রানে থামে বাংলাদেশ। এ রান করতে গিয়ে ৬ উইকেট হারায় তারা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৮ রান করেন সাকিব আল হাসান। আফিফ করেন ৩৪ রান। এছাড়া উল্লেখযোগ্য স্কোর আর কেউ দাঁড় করাতে পারেননি।

 

১৯৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট কর‍তে নামা বাংলাদেশ দলকে কখনোই মনে হয়নি এ রান টপকিয়ে ম্যাচ জিততে পারার আত্মবিশ্বাস আছে। বরং জয়-পরাজয় ভুলে ২০ ওভার ব্যাট করতে পারাটাই যেন বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ব্যাটসম্যানদের।

 

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে প্রায় প্রতি ম্যাচেই বদল আসছে ওপেনিংয়ে। আজও তার ব্যত্যয় হয়নি। মুমিন শাহরিয়ার না থাকায় তিন থেকে তুলে ইনিংস শুরু করতে পাঠানো হয় লিটন দাসকে। তবে টেস্ট সিরিজ থেকে রান খরায় ভোগা এ ডানহাতি ফিরে যান ৫ রানে। দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়ে ব্যাট চালিয়ে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে প্রথম বলে ক্যাচ দেন লিটন। ম্যাককয়ের করা পরের বলেই বোল্ড হন এনামুক হক বিজয়। ৪ বলে ৩ করেন তিনি।

 

অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ চারে নেমে পাল্টা আক্রমণের ইঙ্গিত দেন ওডিন স্মিথকে টানা দুই বলে চার ও ছক্কা মেরে। তবে ওই ওভারে তিনিও বিদায় নেন। করে যান ৭ বলে ১১ রান।

 

মাহমুদউল্লাহ সাজঘরে ফিরলে দলীয় ২৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। এরপর খানিক চেষ্টা করেছিলেন সাকিব আল হাসান আর আফিফ হোসেন। চতুর্থ উইকেটে দুইজনের পার্টনারশিপ থেকে আসে ৪৪ বলে ৫৫ রান। আফিফ ২৭ বলে ৩৪ রানে স্কুপ করতে গিয়ে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হলে ভাঙে এ জুটি। এরপর ৬ ওভারে জয়ের জন্য যখন ১০০ রান প্রয়োজন, তখন ১৩ বলে ৭ রান করে আউট হন নুরুল হাসান সোহান। শেষদিকে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে নিয়ে তিনি যখন হাতে খুলে ব্যাটিং শুরু করেন, তার বেশ আগেই ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে সফরকারীরা।

 

এর আগে ডোমিনিকায় টস জিতে ব্যাট করতে নামে উইন্ডিজ। তবে ইনিংসের শুরুটা ভালো ছিল না তাদের। দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলেই কাইল মায়ার্সকে বোল্ড করেন অফ স্পিনার শেখ মেহেদী হাসান। ৯ বলে ১৭ রান করেন মায়ার্স। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে আসে দ্বিতীয় সাফল্য।

 

সাকিবের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে আকাশে তুলে দেন শামরাহ ব্রুকস। শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ নেন মাহমুদউল্লাহ। শূন্য রানে ফেরেন ব্রুকস।

 

২৬ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ওপেনার ব্র‍্যান্ডন কিংকে নিয়ে দলের হাল ধরেন নিকোলাস পুরান। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ব্যাট চালিয়ে খেলে দুইজন জমা করেন ৭৪ রান। তবে ষষ্ঠ বোলার হিসেবে হাত ঘোরাতে এসে দলকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন মোসাদ্দেক। ইনিংসের ১৩তম ওভারে কোনো রান না দিয়েই পুরানকে ফেরান তিনি। ৩০ বলে ৩৪ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন উইন্ডিজ অধিনায়ক।

 

এরপর ব্যক্তিগত ফিফটির কোটা পূর্ণ করেন কিং। ৩৬ বলে আসে টি-টোয়েন্টিতে তার এই তৃতীয় অর্ধশতক। পরে কিংকে একপাশে দর্শক বানিয়ে রেখে ব্যাট হাতে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন রভম্যান পাওয়েল। বাংলাদেশি বোলারদের ওপর ধ্বংসলীলা চালিয়ে মাত্র ২০ বলে ফিফটি করেন তিনি।

 

পাওয়েল অর্ধশতক করার আগের বলটিতেই অবশ্য আউট হন কিং। শরিফুলকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাকিবের হাতে ক্যাচ দেন ৫৭ রানে।

 

পরে রোমারিও শেইফার্ড ৪ বলে ২ রান করে আউট হলে পাওয়েল ২টি চার ও ৬টি ছয়ের সাহায্যে ২৮ বলে ৬১ রান করে অপরাজিত থাকেন। সঙ্গে শেষদিকে স্মিথের ৪ বলে ১১ রানের ঝড়ো ইনিংসের কল্যাণে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ১৯৩ রানের পুঁজি পায় উইন্ডিজ।

 

বাংলাদেশের হয়ে বাঁহাতি পেসার শরিফুল ২টি, মোসাদ্দেক, মেহেদী এবং সাকিব ১টি করে উইকেট নেন।

 

ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন রভম্যান পাওয়েল। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে পণ্ড হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচ হেরে সিরিজে ০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে বাংলাদেশ।

 


মন্তব্য
জেলার খবর