চাঁদের মাটিতে সবুজ চারা

১৫ মে ২০২২

শেষ বার চাঁদের মাটিতে মানুষ পা রেখেছিল সেই ১৯৭২ সালে। পঞ্চাশ বছর পরে ফের পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহে মানুষ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। সেই মতো জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে। ও দিকে, চিন ও রাশিয়াও যৌথ উদ্যোগে লুনার স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে ফেলেছে। কিন্তু চাঁদে গিয়ে থাকতে হলে মানুষের বাঁচার জন্য চাই খাবার। জীবনধারণের সেই ন্যূনতম চাহিদা মেটানো সম্ভব কি না, তা জানতেই শুরু হয়েছিল গবেষণা। মিলল সাফল্য। চাঁদের মাটিতে জন্ম নিল এক টুকরো সবুজ!

 

অর্ধশত বছর আগে অ্যাপোলো অভিযানের সময়ে চাঁদ থেকে মাটি এনেছিলেন মহাকাশচারীরা। চাঁদের মাটিকে রিগোলিথ-ও বলা হয়। রিগোলিথের কিছু নমুনা সে সময়ে পরীক্ষাগারে ব্যবহার না-করে ভবিষ্যতের জন্য রেখে দেওয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, পরে যখন আরও উন্নত হবে বিজ্ঞান, সে সময়ে পরীক্ষা করে দেখা হবে। সামনে যদি ফের চন্দ্রাভিযান হয়, সে ক্ষেত্রে পুরনো নমুনা ব্যবহারের এটি আদর্শ সময়। তাই সম্প্রতি ‘তোরঙ্গ’ থেকে বার করা হয়েছিল অ্যাপোলো অভিযানের সময়ে আনা মাটির নমুনা।

 

গবেষণাগারে সেই মাটিতেই এ প্রথম সবুজ প্রাণের সঞ্চার ঘটালেন বিজ্ঞানীরা। নাসা জানিয়েছে, এ মাটিতে তেমন পুষ্টিগুণ নেই। তারই মধ্যে জন্মেছে অ্যারাবিডোপসিস থালিয়ানা। এদের জীবনীশক্তি খুব বেশি। অল্পেতে মরে না। গাছটিকে আফ্রিকা ও ইউরেশিয়ায় দেখতে পাওয়া যায়। সর্ষের আত্মীয় বলা যেতে পারে এদের। ব্রকোলি, ফুলকপির মতো ক্রুসিফেরাস জাতের গাছ। গবেষণাগারে এ কাজটি করে দেখিয়েছে ফ্লরিডা বিশ্ববিদ্যালয়।

 

২০ দিন বাদে ফুল আসার ঠিক আগে মাটি থেকে গাছগুলি কেটে নেওয়া হয়েছিল। তার পর তা পাঠানো হয়েছিল আরএনএ সিকোয়েন্সিং-এ। জিনের পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে অ্যারাবিডোপসিসের প্রতিক্রিয়া যেমন হয়, এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। সামান্য দূর্বল। তবে বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, ‘‘আসল কথা হলো, গাছ জন্মেছে।’’


মন্তব্য
জেলার খবর