আনুষ্ঠানিকভাবে ঐতিহাসিক জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করা হয়েছে। শুক্রবার বিকালে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এ সনদে সাক্ষর করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতারা। তবে অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ বেশ কয়েকটি বাম দলের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

জানা গেছে, বিকাল সাড়ে ৪টার পর জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর আগে অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার, খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ আরও বিভিন্ন দলের নেতারা।

গত বছর  আগস্টে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এরপর রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথম ধাপে গঠিত ৬টি সংস্কার কমিশনের সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।  এসব আলোচনায় ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য হয়। এরপর এসব প্রস্তাবকে অন্তর্ভুক্ত করে জুলাই সনদের খসড়া তৈরি করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ খসড়ার ওপর  আলোচনা ও বিশেষজ্ঞদের মতামতও নেওয়া হয়।

সব দলের মতামত পর্যালোচনার পররে জুলাই জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগেই গত মঙ্গলবার সনদের চূড়ান্ত কপি সব রাজনৈতিক দলকে দেওয়া হয়।

এদিকে, জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতাকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং জুলাই আহতদের বীর হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানসহ ৩ দফা দাবিতে অনুষ্ঠান শুরুর অনেক আগেই সংসদ ভবন এলাকায় অবস্থান নেন জুলাই যোদ্ধারা। স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ঘিরে  সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। জুলাই সনদে জুলাই যোদ্ধাদের স্বীকৃতি থাকবে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ   এ কথা জানিয়ে তাদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানালেও আন্দোলনকারীরা তাদের অবস্থান ধরে রাখে।  পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের সংসদ ভবন এলাকা থেকে সরিয়ে দিতে গেলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ জানান, জুলাই যোদ্ধাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামার ৫ নম্বর দফা সংশোধন করা হয়েছে।

বিডি২৪অনলাইন/এনএন/এমকে