অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদষ্টোর পদ থেকে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘পদত্যাগ  ভাবনা’ নিয়ে আলোচনা চলছে দেশজুড়ে। যদিও প্রধান উপদেষ্টা আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে এখনো কিছুই জানাননি। এদিকে   নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়ে সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে চাইলেও ইউনূসের পদত্যাগ আপাতত চাচ্ছে না বিএনপি। ওদিকে ড. ইউনূসের পদত্যাগের ভাবনার  বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে বাধাগ্রস্ত করে আরেকটা এক-এগারোর বন্দোবস্ত করার পাঁয়তারা চলছে। এ অবস্থায় ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক, বাংলাদেশপন্থি ও ধর্মপ্রাণ ছাত্র-জনতাকে সার্বভৌমত্ব, সংস্কার ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। দেশপ্রেমিক সেনা অফিসার ও সৈনিকদের সার্বভৌমত্ব ও বাংলাদেশ রক্ষায় প্রস্তুত থাকার কথাও বলেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার গুঞ্জন ছড়ায়-  প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করতে পারেন ড. ইউনূস। দিনভন গুঞ্জনের ডালপালা প্রসারিত হয়। রাতে  প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার পর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করার বিষয়টি ভাবছেন। তাঁর কাছে মনে হয়েছে পরিস্থিতি এরকম যে, তিনি কাজ করতে পারবেন না।

এদিকে শুক্রবার (২৩ মে) রাতে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন নাহিদ ইসলাম, সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, দেশের রাজনীতিকে সব প্রকার আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত করে স্বাধীন ও সার্বভৌমভাবে পরিচালনা করাই আমাদের লক্ষ্য।  এ দেশকে বারবার বিভাজিত করা হয়েছে, জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট করা হয়েছে, দেশেকে দুর্বল করে রাখার লক্ষ্যে।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পর থেকে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি ও দেশকে বিভাজিত করতে আবারো দিল্লী থেকে ছক আকা হচ্ছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন নাহিদ। এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ড. ইউনূসকে জনগণকে দেওয়া সংস্কার, বিচার ও ভোটাধিকারের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে। তাকে দায়িত্বে থেকেই রাজনৈতিকভাবে সব সমস্যার সমাধান করতে হবে। জুলাই ঘোষণাপত্র নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দিতে হবে। ঘোষিত টাইম ফ্রেমের মধ্যেই নির্বাচন হবে। নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কারের জুলাই সনদ রচিত হবে। নির্বাচনের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হবে এবং বিচারের রোডম্যাপ আসতে হবে। নতুন সংবিধানের জন্য গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচন একই সাথে দিতে হবে।

ওদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন  সংবাদ সম্মেলনে বলেন,  আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা না করলে বিএনপির পক্ষে এ সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। নির্বাচনের জন্য অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করার দাবি জানান তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন,  এ বিষয়ে আমাদের কোনো চাপ ও দ্বিধাবিভক্ত নেই। আমরা কেউ প্রধান উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে বলিনি। যারা বিতর্কিত উপদেষ্টা আছেন, তাদের বাদ দেওয়ার কথা বলেছি আমরা।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি চাচ্ছে না- প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করুক। বিএনপি চায় নির্বাচন করে, নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে চলে যান তিনি। তবে দ্রুতসময়ের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করার দাবি জানান তিনি।

বিডি২৪অনলাইন/আরডিএন/এমকে